টোকিও : "এভাবে চললে" একদিন দেশটাই 'অদৃশ্য' হয়ে যাবে। জন্ম হার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এভাবেই উদ্বেগ প্রকাশ করলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী (Japan Prime Minister) ফুমিও কিশিদার (Fumio Kishida) উপদেষ্টা মাসাকা মোরি। 


শিশু জন্মের হার নিয়ে সম্প্রতি সমীক্ষা প্রকাশ করে জাপান। তাতে দেখা গেছে, গত বছর জন্মের হার রেকর্ড কম ছিল। গত সাত বছরেও একই দৃশ্য দেখা গেছে (প্রতি বছর এক হাজার জনসংখ্যাপিছু জন্মের হার নির্ণয় করা হয়)। মোরি-কে উদ্ধৃত করে Bloomberg লিখেছে, "বিশাল এই ক্ষতির জন্য ভুগতে হবে সাধারণ মানুষকেই। এটা একটা ভয়ঙ্কর সমস্যা। যা এখনকার শিশুদের কষ্ট দেবে।"  


শুধু জাপান-ই নয়, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া ও আমেরিকার মতো দেশগুলিতেও শিশু জন্মের হার উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। উন্নত দেশগুলিতে এই পরিস্থিতির কারণ কী ?


একটি দেশে বার্ষিক জনসংখ্যার পরিবর্তন গণনা করা হয়, কতজন জন্মাল এবং যারা দেশান্তরিত হয়েছে, এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সময়ে কতজন মারা গেছেন এবং বহিঃপ্রবাসের সংখ্যা বিয়োগ করে। অর্থাৎ, জন্ম, মৃত্যু এবং অভিবাসনই জনসংখ্যা পরিবর্তনের হার নির্ণয় করার মূল বিষয়। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, স্বাধীনতার পর বিশাল সংখ্যায় জন্ম ও মৃত্যুর হার দেখেছে ভারত। বিভিন্ন ধরনের রোগ এবং রাস্তা, হাসপাতালের মতো পরিকাঠামোর অভাবে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি দেখা গেছে। যখন পর্যাপ্ত পরিমাণে ন্যূনতম পরিষেবা পায় অধিকাংশ মানুষ, তখন মৃত্যুর হার কমতে থাকে। শিশু জন্মের হার বৃদ্ধি পাওয়ায়, সার্বিক জনসংখ্যাও বেড়েছে। 


কিন্তু, জন্মের হার কমার উদ্বেগ কোথায় ?


এই পরিস্থিতিতে মাসাকা মোরির করা 'অদৃশ্য' মন্তব্য চরম পর্যায়ের ইঙ্গিত দেয়। প্রথমত, জনসংখ্যার বেশির ভাগ মানুষ যদি বার্ধক্য পর্যায়ে পৌঁছে যান বা শীঘ্রই অবসর গ্রহণ করার দিকে এগিয়ে যান, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা কর্মক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছেন। তরুণ প্রজন্মকে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে হবে। কারণ, তাঁদের পেনশনের জন্য সরকারের অধিকাংশ টাকা চলে যাওয়ায়, নতুন প্রজন্মের জন্য তা নামমাত্র পড়ে থাকবে। তাছাড়া কর্মক্ষম লোকের অভাবের অর্থ বয়স্কদের জন্য যত্ন নেওয়ার লোক কম। অর্থাৎ কোনও দেশে শিশু জন্মের হার কমতে থাকা, অবশ্যই সংশ্লিষ্ট জাতির কাছে অশনি সংকেত।


আরও পড়ুন ; ৮৫ জনকে নিয়ে সলিল সমাধি, তার পর জলের নিচে পড়ে ৮০ বছর, খোঁজ মিলল সর্বকালীন বিধ্বংসী ডুবোজাহাজের