নয়াদিল্লি: বুথফেরত সমীক্ষা নস্যাৎ করে ঝাড়খণ্ডে জয়ের পথে I.N.D.I.A জোট। রাজ্যের মোট ৮১টি বিধানসভা আসনে নির্বাচন হয়েছিল। শনিবার সকালে গণনা শুরু হওয়ার পর সেখানে জয়ের দিকে এগোচ্ছে কংগ্রেস এবং হেমন্ত সরেনের ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (JMM)-র জোট। দুপুর সওয়া ২টো পর্যন্ত যে হিসেব সামনে এসেছে, তাতে ঝাড়খণ্ডে ম্যাজিক সংখ্যার চেয়েও এগিয়ে রয়েছে I.N.D.I.A শিবির। সেখানে ৫৬টি আসনে জয়ী হয়েছে তারা। বিজেপি নেতৃত্বাধীন NDA পেয়েছে ২৪টি আশন। (Jharkhand Assembly Election Results 2024)


ঝাড়খণ্ডে প্রথম দফায় ৪৩টি বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচন হয়। দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন হয় ৩৮টি আসনে। এবার ঝাড়খণ্ডে হেমন্তের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াই ছিল বিজেপি-র। বিধানসভার আগে হেমন্তর গ্রেফতারি, তার পর ক্ষমতায় পর প্রত্যাবর্তন এবং শেষ পর্যন্ত চম্পরাই সরেনের বিদ্রোহী হয়ে ওঠা, গোড়া থেকেই চাপে রেখেছিল JMM-কে। কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে জোরকদমে প্রচারে নামে তারা। ভোটবাক্সে তারই প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। (Jharkhand Elections 2024 Result)


ঝাড়খণ্ডে এবার বিজেপি লড়াইয়ে নেমেছিল অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (AJSU), সংযুক্ত জনতা দল (JDU)-কে সঙ্গে নিয়ে। বুথফেরতসমীক্ষায় রাজ্যে বিজেপি নেতৃত্বাধীন NDA জোট ৪২-৪৭টি আসন পেতে পারে বলে জানানো হলেও, এদিন বেলা যত গড়াতে থাকে, ততই জয়ের দিকে এগিয়ে যায় I.N.D.I.A শিবির। ঝাড়খণ্ডে এবারের নির্বাচনে I.N.D.I.A শিবিরের অংশ JMM, কংগ্রেস, রাষ্ট্রীয় জনতা দল (RJD), CPI(M). 
এখনও পর্যন্ত গণনা যেভাবে চলছে, তাতে ঝাড়খণ্ডে ফের হেমন্ত সরকারের প্রত্যাবর্তন ঘটতে চলেছে। 


এবারে ঝাড়খণ্ডে বিজেপি-র হয়ে প্রচারে গিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ থেকে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। বাংলাদেশ থেকে বেআইনি অনুপ্রবেশ, নিয়ে লাগাতার সরেন সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে যান তাঁরা। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা ঝাড়খণ্ডের 'মা-মাটি-রোটি'র উপর কব্জা করছেন বলেও লাগাতার প্রচার চালায় বিজেপি। সেই নিয়ে বিতর্কের মধ্যেও ফাঁদে পা দেয়নি JMM. বরং জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলিকে সামনে রেখেই প্রচার সারেন হেমন্ত। বিশেষ করে 'মুখ্যমন্ত্রী সম্মান যোজনা'। 'আদিবাসী অস্মিতা'কে সামনে রেখে এগোয় তাঁর দল। এমনকি 'মইয়া সম্মান যোজনা'রও সূচনা করেন হেমন্ত,ঠিক পশ্চিমবঙ্গের 'লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে'র আদলে, যার আওতায় মহিলাদের মাসে ১০০০ টাকা করে পাবেন। তাই মহিলা বোট হেমন্ত এবং তাঁর দলকে অনেকটা সুবিধা করে দিয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 


যদিও এবারের নির্বাচন হেমন্ত এবং তাঁর দলের জন্য কম কঠিন ছিল না। আচমকা গ্রেফতার হন হেমন্ত, তাঁদের দলের নেতারা একে একে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। এমনকি হেমন্তের নিজের পরিবারের সদস্যা বিজেপি-তে যোগ দেন। জেলযাত্রার পর হেমন্ত যখন ক্ষমতায় ফেরেন, সেই সময় আবার বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন চম্পাই। তবে মরিয়া লড়াই চালিয়ে যান হেমন্ত। জানিয়ে দেন, রাজ্যে সরাসরি বিজেপি এবং তাঁর মধ্যে লড়াই। আদিবাসী নেতাকে বিজেপি হেনস্থা করছে বলে তুলে ধর তাঁর দল। আর এই লড়াইয়ে বিরোধীদের পাশে পান হেমন্ত, যার সুফল ভোটবাক্সে এসে পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।