নয়াদিল্লি: আর্থিক তছরুপ মামলায় নাটকীয় পরিস্থিতি। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের খোঁজ করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিল ED. কিন্তু হেমন্ত হাজিরা দেননি বলে খবর। তাঁর দফতর থেকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, বুধবার দুপুর ১টায় ED-র দফতরে হাজিরা দেবেন তিনি। কিন্তু হেমন্ত ঠিক কোথায় রয়েছেন, কোনও খবর নেই। গত ২৪ ঘণ্টা ধরে তিনি 'নিখোঁজ' বলে দাবি সামনে আসছে। (Hemant Soren)


সংবাদমাধ্যমে ED-র একটি সূত্র জানিয়েছে, হেমন্ত কোথায় থাকতে পারেন, সেই সংক্রান্ত কোনও খবর নেই ED-র কাছে। এখনও পর্যন্ত যে তথ্য মিলেছে, চার্টার্ড বিমানে চেপে রাঁচি থেকে দিল্লি এসেছিলেন হেমন্ত। দিল্লি বিমানবন্দরেই পড়ে রয়েছে সেই চার্টার্ড বিমান। হেমন্তের সহযোগীদের সকলের ফোন বন্ধ রয়েছে। দিল্লিতে হেমন্তের দু'টি BMW গাড়ি বাজোপ্ত করেছে ED. হেমন্তের দিল্লির বাড়ি থেকে নগদ ৩৬ লক্ষ টাকা এবং কিছু নথিও উদ্ধার করা হয়েছে বলে খবর। হেমন্তের গাড়ির চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। (Jharkhand News)


কিন্তু এখনও পর্যন্ত হেমন্তের কোনও খোঁজ নেই। সোমবারই দিল্লিতে হেমন্তের বাড়ি এবং ঝাড়খণ্ড ভবনে হানা দেয় ED. কিন্তু সেখানেও খোঁজ মেলেনি হেমন্তের। শোনা যাচ্ছে, রবিবার রাতেই দিল্লি ছেড়েছেন হেমন্ত। কিন্তু কোথায় গিয়ে থাকতে পারেন হেমন্ত, জানা নেই ED-র। এমন পরিস্থিতিতে হেমন্তের ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতা-বিধায়কদের রাঁচি ছেড়ে যেতে বারণ করা হয়েছে। জোট সরকারে শামিল কংগ্রেস এবং রাষ্ট্রীয় জনতা দলের নেতারাও কার্যত প্রমাদ গুনছেন। হেমন্তকে যে কোনও মুহূর্তে গ্রেফতার করা হতে পারে বলে ফিরছে মুখে মুখে।


আরও পড়ুন: INS Sumitra: মাছ ধরতে বেরিয়ে অপহৃত, ট্রলার ছিনতাই, জলদস্যুদের হাত থেকে পাক নাবিকদের উদ্ধার করল ভারত


ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণণ বলেন, "সংবাদমাধ্যমের মতো আমরাও মুখ্যমন্ত্রীর জবাবের জন্য অপেক্ষা করছি। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন। সংবিধানের গণ্ডির মধ্যে থেকে কাজ করতে হবে আমাদের। আমরা চাই, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বজায় থাকুক।" আপাতত ঝাড়খণ্ডে হেমন্তের বাসভবন, রাজভবন এবং রাঁচিতে ED-র দফতরের বাইরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে ছিলেন হেমন্তের দলের বিধায়করা। 


এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে ঝাড়খণ্ডে। লোকসভা নির্বাচনের আগে ইচ্ছাকৃত ভাবে হেমন্তকে নিশানা করা হচ্ছে বলে দাবি তার দল এবং সহযোগীদের। JMM-এর দাবি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে ED-কে কাজে লাগানো হচ্ছে। কংগ্রেসের দাবি, ইচ্ছাকৃত ভাবে হেমন্ত 'নিখোঁজ' বলে বিভ্রান্তি তৈরি করছে ED.  আসলে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার লক্ষ্যে এগোচ্ছে বিজেপি। তাই এসব ভুয়ো তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। যদিও ঝাড়খণ্ড বিজেপি-র দাবি, হেমন্ত চম্পট দিয়েছেন। রাজ্যপালকে পরিস্থিতি বুঝে পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছে তারা। দলের তরফে বলা হয়, "রাজ্যপালের উপরই দায়িত্ব ন্যস্ত। সময় এলে আমরা এগোব।"


বেআইনি ভাবে জমি হস্তান্তর এবং আর্থিক তছরুপ নিয়ে তদন্ত করছে ED. সেই মামলায় ইতিমধ্যেই ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে ED. এর আগেও একবার হেমন্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ED. আবার গত ২০ জানুয়ারি ডেকে পাঠানো হয়। সোমবার যেভাবে হেমন্তের বাসভবনে নিরাপত্তাবাহিনীকে নিয়ে প্রবেশ করে ED, সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। JMM-এর দাবি, বুধবার হাজিরা দেবেন বলে আগেই জানিয়েছিলেন হেমন্ত। তার পরও ED বিভ্রান্ত করছে মানুষকে।