রাঁচি: আর্থিক তছরুপের মামলায় ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী গ্রেফতার। মুখ্য়মন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরে গ্রেফতার করা হল সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে (Hemant Soren)। কিছুক্ষণ আগেই রাজভবনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। এদিনই দুপুর থেকে তাঁকে ম্যারাথান জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। তারপরেই ইডির আধিকারিকদের সঙ্গেই রাজভবনে গিয়ে ইস্তফাপত্র জমা দেন তিনি। তখনই জল্পনা তুঙ্গে ওঠে যে জমি কেনা-বেচা দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হতে পারেন হেমন্ত সোরেন। সেই আশঙ্কাই সত্যি প্রমাণিত হয়েছে। সূত্রের খবর, আগামীকাল সকাল ১০টার সময় হেমন্ত সোরেনকে আদালতে পেশ করা হতে পারে।



কী অভিযোগ হেমন্তের বিরুদ্ধে?
বেনামে জাল নথি দিয়ে সেনার জমি, উপজাতিদের জমি বেআইনিভাবে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে হেমন্তের বিরুদ্ধে। বিপুল পরিমাণ আর্থিক তছরুপের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।

ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সাংসদ মহুয়া মাঝি জানিয়েছেন যে ইডির হেফাজতে রয়েছেন হেমন্ত সোরেন। তিনিই জানিয়েছেন যে রাজ্যপালের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন হেমন্ত সোরেন। তিনিই জানিয়েছেন, পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন চম্পাই সোরেন। সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন, 'ইডি তদন্তকারীদের সঙ্গেই রাজভবনে গিয়েছেন হেমন্ত সোরেন। চম্পাই সোরেন পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন। আমাদের কাছে সমর্থন রয়েছে।'    


এদিনই আর্থিক তছরুপ মামলা হেমন্ত সোরেনকে হেফাজতে নিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এদিনই রাঁচিতে তাঁর বাসভবনে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। তার আগে বাসভবনের সামনে জমায়েত করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল জোটের সমর্থকরা। তারপরেই সেখানে ১৪৪ ধারা জারি হয়। সম্প্রতি দিল্লিতে হেমন্তের বাসভবনে তাঁর খোঁজে গিয়েছিল ইডি। সেখানে তাঁকে পাওয়া যায়নি। সেখান থেকেই একটি বিলাসবহুল গাড়ি ও ৩৬ লক্ষ টাকা নগদ বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি। এরপর দিল্লি এয়ারপোর্টে যখন ইডি নজর রাখছিল। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সড়কপথে প্রায় ১২০০ কিমি পেরিয়ে রাঁচিতে আসেন হেমন্ত সোরেন। সেখানে সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। তারপর বুধবার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে হেমন্ত সোরেন। রাতে তিনি পদত্যাগ পত্র জমা দেওয়ার পরে তাঁকে হেফাজতে নিয়েছিল ইডি। তারপরেই রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইডি।


হেমন্ত সোরেনকে যে গ্রেফতার করা হতে পারে তা আগে থেকেই আঁচ করতে পেরেছিল ঝাড়খণ্ডের জেএমএম-কংগ্রেস জোট। সেদিকে তাকিয়েই হেমন্ত সোরেনের স্ত্রী কল্পনা সোরেনকে নিয়ে আসা হয়েছিল মন্ত্রিসভায়। এই মাসের প্রথমেই পদত্যাগ করেন বিধায়ক সরফরাজ আহমেদ। মনে করা হয়েছে, হেমন্ত সোরেন গ্রেফতার হলে যাতে তাঁর স্ত্রী কল্পনা সোরেন মুখ্যমন্ত্রী পদে বসতে পারেন তার জন্যই এই পদক্ষেপ ছিল। যদিও বুধবার বিকেল থেকে নামটা পাল্টে যায়, নাম উঠে আসে চম্পাই সোরেনের। তিনি জেএমএম-এর বর্ষীয়ান নেতা, মন্ত্রিসভার সদস্য়ও। 


আরও পড়ুন: 'কাচ ভাঙা অবস্থায় বাংলায় ঢুকেছে...আমরা এসব করি না', মন্তব্য মমতার