জোশীমঠ : মাটি আলগা হতে শুরু করেছিল ৩ বছর আগে। প্রতি বছর আড়াই ইঞ্চি করে বসে যাচ্ছে জোশীমঠ (Joshimath)। সম্প্রতি সামনে এসেছে দেরাদুনের (Dehradun) একটি সরকারি সংস্থা ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ রিমোট সেন্সিং-এর সমীক্ষা রিপোর্ট। তাতেই জানা গেছে, ২০২০ সালের মার্চ থেকেই জোশীমঠ ও তার আশপাশের এলাকায় ফাটল ধরতে শুরু করেছিল। হিমালয়ের (Himalaya) কোলে এই ছোট্ট জনপদে এখন বিপজ্জনক বাড়ির সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭২৩। গতকাল দুটি হোটেল ভাঙার কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। কিন্তু স্থানীয়দের বিক্ষোভে আটকে যায় ভাঙার কাজ।


কোথায় দাঁড়িয়ে জোশীমঠের পরিস্থিতি ?


উঠোনে বিপদের লক্ষণরেখা টেনেছে ফাটল। বাড়ির বাইরে লাল রঙের ক্রস চিহ্ন দিয়ে প্রশাসন জানান দিচ্ছে, এ বাড়ি বিপজ্জনক। রাস্তা, বাড়ি, মন্দির, হোটেল... যত্রতত্র ধস, আর শুধুই বড়বড় ফাটল। এই পরিস্থিতিতে, বিপদ-আশঙ্কার উপর ভিত্তি করে জোশীমঠকে তিনটি জোনে ভাগ করেছে উত্তরাখণ্ড প্রশাসন। ডেঞ্জার, বাফার এবং কমপ্লিটলি সেফ। প্রশাসনের তরফে বিপজ্জনক তালিকাভুক্ত অঞ্চলকে দ্রুত খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেগুলি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।


সোমবার উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী জানান, সবরকম ভাবে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, জোশীমঠকে বাঁচাতে একত্রিত হতে হবে। 


সোমবার সেন্ট্রাল বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর একটি বিশেষজ্ঞ দল জোশীমঠের বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শন করে। প্রশ্ন উঠছে, গত ২ সপ্তাহে কী এমন ঘটল, যে জোশীমঠ আজ সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়েছে। ঘরছাড়া মানুষেরা অবশ্য এর জন্য দায়ী করছেন তপোবন-বিষ্ণুগড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পকে। তাঁদের দাবি, পাহাড়ের বুকে বেআইনিভাবে এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলার ফলেই এসেছে এই বিপর্যয়।


আর কি ফেরা হবে নিজের বাড়িতে, সেই প্রশ্নটাই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে জোশীমঠের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশের মধ্যে।


দিনকয়েক আগেই জোশীমঠকে বসবাসের অযোগ্য বলে ঘোষণা করে বিজেপি-শাসিত উত্তরাখণ্ড সরকার। হিমালয়ের কোলে এই ছোট্ট জনপদে একের পর এক বাড়িতে ফাটল ধরে। বহু পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়। জোশীমঠ নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। পরিস্থিতি পর্যালোচনায় ৭টি সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটিও গঠন করে কেন্দ্র।  


আরও পড়ুন ; ক্রমশ বাড়ছে ফাটল! দুর্যোগের আশঙ্কায় কাঁটা জোশীমঠ