কাবুল : একের পর এক প্রদেশের দখল নিচ্ছে তালিবানরা। চাপে রয়েছে আফগানিস্তান সরকার। এই পরিস্থিতিতে তালিবানের সঙ্গে সমঝোতায় আসার সিদ্ধান্ত নিল সরকার। কাতারে থাকে সরকারের মধ্যস্থতাকারীরা তালিবানকে ক্ষমতা ভাগ করে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। এমনই খবর সূত্রের। এর পরিবর্তে মধ্যস্থতাকারীদের তরফে যুদ্ধে ইতি-টানার শর্ত রাখা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে এমনটাই জানিয়েছে সরকারের তরফের একটি সূত্র।


দিনকয়েক আগেই দুই আফগান প্রদেশের রাজধানী দখল করে নিয়েছিল তালিবান। যা নিয়ে চিন্তা বাড়ছিল আফগান সরকারের। গত শনিবার তার পাল্টা হামলায় জবাব দেয় মার্কিন সেনা। ট্যুইট করে এই খবর জানান আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আধিকারিক ফাওয়াদ আমন। ট্যুইটে তিনি লেখেন, পাল্টা আক্রমণে ৫৭২ জন তালিবানি জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ৩০৯ জন। লগমন, নানগহর, গজনি, পকশিয়া, হেলমন্দ ,কান্দাহার, নিমরুজ, তকাহার, কপিসা প্রদেশে এই অভিযান চালানো হয়েছে।


জজানের শেবারগন শহরের তালিবানি ঘাঁটি গুড়িয়ে দেয় মার্কিন বিমান। এই এয়ার স্ট্রাইকের ফলে তালিবানিদের প্রচুর অস্ত্র ভাণ্ডার, ছাড়াও প্রায় শতাধিক গাড়ি ধ্বংস হয়। এদিকে ৩১ অগাস্টের মধ্যেই মার্কিন সেনা আফগান ভূখণ্ড ছাড়বে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার আগে মার্কিন নাগরিকদের দ্রুত বাণিজ্যিক উড়ান ধরতে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, কম স্টাফ নিয়ে দেশের নাগরিকদের সাহায্য করতে সমস্যায় পড়ছে মার্কিন দূতাবাস। এখন কেবল কাবুলেই পাওয়া যাচ্ছে দূতাবাসের পরিষেবা।


প্রসঙ্গত, সেনার সঙ্গে নিত্যদিন তালিবানি জঙ্গিদের লড়াই চলছে। দেশের একটি বড় অংশ এখন তালিবানিদের দখলে। যা উদ্ধার করতে প্রাণপণ চেষ্টা চালায় আফগান সেনা। তবে এখনও পর্যন্ত তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশেষ সাফল্য পায়নি সেনাবাহিনী। উল্টে একের পর এক হাতছাড়া হয়ে চলেছে প্রদেশের বহু এলাকা। এর উপর আমেরিকা ও ন্যাটো বহু যুগ ধরে চলা যুদ্ধ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এদিকে কাবুল থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরে থাকা গজনি শহরের দখল নিয়ে সম্প্রতি সাদা পতাকা উড়িয়েছে জঙ্গিরা। বুধবার পেন্টাগনের তরফে জানানো হয়, তালিবনদের ক্রমাগত এগিয়ে আসা প্রমাণ করছে যে তাদের নেতারা বিশ্বান করেন, তারা আফগানিস্তানের দখল নিতে পারবে। সমঝোতায় বসার পরিবর্তে ক্ষমতার বলে দখল নিতে পারবে। ভারতও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আফগানিস্তানের সামগ্রিক পরিস্থিতির দিকে নজর রাখার কথা জানায়। 


এই পরিস্থিতিতে আজ আফগানিস্তান সরকারের তরফের এক সূত্র সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে জানান, সরকারের তরফে কাতারের কাছে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবে তালিবানের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগ করে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে দেশজুড়ে চলা হিংসা থামাতে হবে।