ভোপাল: রাহুল গাঁধী এবং প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য। বিতর্কে মধ্যপ্রদেশের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। রাহুল এবং প্রিয়ঙ্কা ভাই-বোন হলেও, তাঁদের আচরণ ভাই-বোন সুলভ নয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাঁর মন্তব্যের বিরোধিতা করা দূর, বরং কৈলাসের সুরেই গলা মিলিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের জনজাতি বিষয়ক মন্ত্রী বিজয় শাহ। (Kailash Vijayvargiya)

Continues below advertisement

রাহুল ও প্রিয়ঙ্কার সমীকরণ নিয়ে সম্প্রতি কুরুচিকর মন্তব্য করেন কৈলাস। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “বর্তমানে এমন একজন বিরোধী দলনেতা, যিনি জোান বোনকে প্রকাশ্যে চুম্বন করেন। আমি জানতে চাই, আপনাদের মধ্যে এমন কেউ আছেন কি, যিনি জোয়ান মেয়ে বা বোনকে প্রকাশ্যে চুম্বন করেছেন? আসলে সংস্কারের অভাব। এসব বিদেশি সংস্কৃতি। ভারত দেশীয় সংস্কৃতিতে চলবে। ভারতীয় সংস্কৃতিতে বোনের গ্রামের জল পর্যন্ত পান করা যায় না।” (Rahul Gandhi)

কৈলাসের ওই মন্তব্য সামনে আসতেই নিন্দায় সরব হয়েছেন সকলে। প্রদেশের কংগ্রেসের তরফে জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ দেখানো হয়। পোড়ানো হয় কুশপুতুল। যদিও কৈলাসের পাশেই দাঁড়িয়েছেন মধ্যপ্রদেশের আর এক মন্ত্রী বিজয়। তাঁর কথায়, “ওটা আমাদের সংস্কৃতি, রীতিনীতি, ঐতিহ্য এসব শেখায় না। আমাদের সংস্কৃতি শেখায়, এসব ঘরের মধ্যে করো, বাইরে প্রকাশ্যে নয়।” বিধায়ক কাঞ্চন তানভের দিতে অঙ্গুলি নির্দেশ করে বিজয় বলেন, “ও তো আমার নিজের বোন! আমি কি প্রকাশ্যে চুম্বন করব ওকে? ভারতীয় সংস্কৃতি এবং সভ্যতা এমনটা শেখায় না।” এর আগে কর্নেল সোফিয়া কুরেশিকে নিয়েও বিতর্কিত মন্তব্য় করেন বিজয়। পরে ক্ষমাও চাইতে হয় তাঁকে। (Priyanka Gandhi Vadra)

Continues below advertisement

তবে এবারে কৈলাস এবং বিজয় যে মন্তব্য করেছেন, তা ভালচোখে দেখছেন না কেউই। কংগ্রেসের মুখপাত্র কেকে মিশ্র বলেন, “দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হল, এত নোংরা, নক্ক্যারজনক মন্তব্যের পরও বিজেপি-র মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না।” মধ্যপ্রদেশের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জিতু পটওয়ারি বলেন, “জঘন্য মন্তব্য করেছেন (কৈলাস)। সরাসরি দেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্যকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন উনি, ভাই-বোনের পবিত্র সম্পর্ককে অপমান করেছেন। ৭০ বছর বয়সে এই ধরনের মন্তব্য করছেন দেশে সংস্কৃতি এবং মহিলাদের নিয়ে।”

কংগ্রেস সাংসদ সুখদেও ভগৎ বলেন, “(কৈলাস) উনি রাজনৈতিক ভাবে অশিক্ষিত। ভাষা নিয়ে সংযত হওয়া উচিত ওঁর। সম্পর্ক, স্নেহ কী জিনিস, সে ব্যাপারে কোনও ধারণা নেই হয়ত। সবকিছুতে হিন্দু-মুসলিম দেখেন। এই ধরনের মন্তব্য অত্যন্ত নিন্দনী, ওঁর চিন্তার দৈন্যতা ধরা পড়ছে।”

সমালোচনার মুখে পড়ে কৈলাস যদিও সাফাই দিয়েছেন। কিন্তু নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাওয়া তো দূর, তাঁর বক্তব্য, “কোনও সম্পর্কের পবিত্রতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছি না আমি। সব সম্পর্কই পবিত্র। কিন্তু সব কিছুর একটা সীমা থাকে, আমি শুধু সেটাই বলেছি। আমি বলেছি, বিদেশে এসব চললেও, এখানে চলে না। বিদেশি সংস্কৃতি এবং ভারতীয় সংস্কৃতি নিয়েই কথা বলেছি আমি।”