নয়াদিল্লি: বানভাসি হিমাচল প্রদেশের লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। স্থানীয় মানুষজন ক্ষোভ জানাতে গেলে, কার্যত হেসেই উড়িয়ে দেন। জানিয়ে দেন, তিনি কোনও মন্ত্রী নন। সেই নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই রাজনীতির প্রতি কার্যত বিরক্তি প্রকাশ করলেন বিজেপি-র তারকা সাংসদ কঙ্গনা রানাউত। হিমাচলের মণ্ডী সাংসদ কঙ্গনা জানালেন, রাজনীতি আর ভাল লাগছে না তাঁর। (Kangana Ranaut News)

অভিনয় জীবন যেমন শুরু থেকেই বিতর্কিত ছিল, তেমনই রাজনীতিতেও আগাগোড়া বিতর্কে জড়িয়েছেন কঙ্গনা। গত বছর প্রথম বারের জন্য সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি। কিন্তু এই একবছরেই কার্যত নাভিশ্বাস উঠতে শুরু করেছে তাঁর। অল ইন্ডিয়া রেডিও-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারেই সেকথা স্বীকার করলেন কঙ্গনা। (Kangana Ranaut

খাতায় কলমে একবছরের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন কঙ্গনা। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “এখন বুঝতে পারছি আমি। রাজনীতি উপবোগ করছি বলতে পারব না। একেবারে অন্য় ধরনের ক্ষেত্র, সমাজসেবার মতো। এটা আমার ব্যাকগ্রাউন্ড নয়। মানুষের সেবা করার কথা কখনও ভাবিনি আমি।”

কঙ্গনা জানিয়েছেন, নারীর অধিকার নিয়ে বরাবর সরব তিনি। কিন্তু সাংসদ হিসেবে যে দায়িত্ব, তা সেভাবে সামলে উঠতে পারছেন না। কঙ্গনার বক্তব্য, “নারীর অধিকারের জন্য লড়াই করেছি। কিন্তু সেটা একেবারে আলাদা। কেউ বলছেন কলের নল ভেঙে গিয়েছে। আমার মনে হচ্ছে, আমি তো সাংসদ! এরা পঞ্চায়েত স্তরের সমস্যা নিয়ে আসছে। ওঁদের যায় আসে না। দেখলেই ভাঙা রাস্তার কথা জানাচ্ছেন। আমি বলি, যে ওটা রাজ্য সরকারের সনস্যা। কিন্তু ওঁরা বলেন, ‘আপনার তো টাকা আছে, নিজের টাকায় করে দিন’!” 

রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন করলে কঙ্গনা বলেন, “দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার মতো যোগ্যতাও নেই তাঁর, তেমন আগ্রহও নেই। সমাজসেবা আমার ব্যাকগ্রাউন্ডই নয়। আমি নিজের মতো জীবন কাটিয়েছি। বড় বাড়ি চাই, বড় গাড়ি চাই, হিরে চাই, নিজেকে সুন্দর দেখানো চাই। ঈশ্বর আমাকে কেন পাঠিয়েছেন জানি না, তবে জীবনে বিরাট আত্মত্যাগ দেখতে পাই না। অমন জীবনের সাধ নেই আমার।”

রাজনীতিতে পা রাখার ঢের আগে থেকেই বিজেপি-বিরোধী শিবিরের রাজনীতিকদের আক্রমণ করে আসছেন কঙ্গনা। কিন্তু সম্প্রতি তিনি নিজে সমালোচনার শিকার হন। সাংসদ হওয়া সত্ত্বেও বানভাসি মণ্ডীতে সময় মতো পৌঁছননি, স্থানীয়দের দিকে সাহায্য়ের হাত বাড়িয়ে দেননি বলে অভিযোগ ওঠে। সেই মতো তাঁকে দেখে ক্ষোভ জানান এক মহিলা। সেই নিয়ে প্রশ্ন করলে, কঙ্গনা জানান, তিনি কোনও মন্ত্রী নন। ত্রাণ তহবিলও তাঁর হাতে নেই। বিপর্যয় সামাল দিতে স্থানীয় প্রশাসনকে যে সাহায্য় করবেন, সেই ক্ষমতাও সীমিত। যেখানে নয় নয় করে ৮০ জন প্রাণ হারিয়েছেন, সেখানে হাসিমুখে এমন জবাব দেওয়ার জন্য তাঁর নিন্দা করেন অনেকেই। আর তার পরই রাজনীতি ভাল লাগছে না বলে জানালেন কঙ্গনা।