নয়াদিল্লি: বিনোদন জগৎ থেকে পা রেখেছেন রাজনীতির ময়দানে। তাও বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না বিজেপি-র তারকা বিজেপি-র তারকা সাংসদ কঙ্গনা রানাউতের। এবার মহাত্মা গাঁধীর জন্মবার্ষিকীতে বিতর্কিত পোস্ট করে খবরের শিরোনামে উঠে এলেন তিনি। কঙ্গনার পোস্টের তীব্র নিন্দা করেছে কংগ্রেস। এমনকি বিজেপি-র তরফেও কঙ্গনার সমালোচনা করা হয়েছে। (Kangana Ranaut)
২ অক্টোবর মহাত্মা গাঁধীর জন্মবার্ষিকী। ওই দিন জন্মগ্রহণ করেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রীও। সেই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কিত লেখা পোস্ট করেন কঙ্গনা। তিনি লেখেন, 'দেশ কে পিতা নহি, দেশ কে লাল হোতে হ্যায়। ধন্য হ্যায় ভারত মা কে ইয়ে লাল'। বাংলায় তর্জমা করলে কঙ্গনার মন্তব্যের অর্থ হয়, 'দেশের পিতা বলে কিছু হয় না, দেশের সন্তান হয়। ভারত মায়ের সন্তানরা ধন্য'। (Kangana Ranaut on Mahatma Gandhi)
মহাত্মা গাঁধীকে জাতির জনক বলা হয়। তাই কঙ্গনা আসলে তাঁকে অপমান করেছেন, মহাত্মা এবং লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মধ্যে তুলনা করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। সেই নিয়ে কঙ্গনার তীব্র নিন্দা করেন কংগ্রেস নেত্রী সুপ্রিয়া শ্রীনেত। তাঁর বক্তব্য, 'বিজেপি সাংসদ কঙ্গনা মহাত্মা গাঁধীকে তাঁর জন্মবার্ষিকীতে অশালীন ভাবে বিদ্রুপ করেছেন। গডসের পূজারী বাপু এবং শাস্ত্রীজির মধ্যে পার্থক্য বুঝিয়েছেন। দলের নতুন গডসে পূজারীকে কি মন থেকে ক্ষমা করে দেবেন নরেন্দ্র মোদি? জাতির জনক, দেশমাতার সন্তান এবং শহিদ, প্রত্যেকের সম্মান প্রাপ্য'।
পঞ্জাবের বিজেপি নেতা মনোরঞ্জন কালিয়াও কঙ্গনার তীব্র সমালোচনা করেন। তাঁর কথায়, "১৫৫তম গাঁধী জয়ন্তীতে কঙ্গনা রানাউত মহাত্মাকে নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তার তীব্র নিন্দা করছি। স্বল্পমেয়াদি রাজনৈতিক কেরিয়ারে বিতর্কিত মন্তব্য করাকে অভ্যাসে পরিণত করেছেন উনি। রাজনীতি ওঁর জন্য উপযুক্ত নয়। রাজনীতি অত্যন্ত গুরুগম্ভীর বিষয়। কিছু বলার আগে ভাবনাচিন্তা করা উচিত। ওঁর বিতর্কিত মন্তব্য দলকে অস্বস্তিতে ফেলছে।"
এরই মধ্যে কঙ্গনার পুরনো একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট নতুন করে ছড়িয়ে পড়েছে। ২০২১ সালে ওই পোস্টটি করেছিলেন কঙ্গনা, যাতে মহাত্মার হত্যাকারী নাথুরাম গডসের ছবি পোস্ট করে তিনি লেখেন, 'প্রত্যেক কাহিনির তিনটি দিক রয়েছে, একটা আপনার, একটা আমার, আর একটা সত্যের। ভাল গল্প বলতে জানলে কিছুর অঙ্গীকারও করেন না, কিছু লুকোনও না। আমাদের পাঠ্যবইগুলি একেবারে অকেজো। শুধু ব্যাখ্যায় ভরা'।
লাগাতার এমন বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য সব মহল থেকেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। প্রশ্ন উঠছে কঙ্গনার বিচারবুদ্ধি নিয়ে। কারণ 'ইমার্জেন্সি' ছবির প্রচার করতে গিয়ে গত মাসেই বিতর্ক বাধান বিজেপি-র তারকা সাংসদ। আন্দোলনের মুখে পড়ে যে তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহার করেছিল নরেন্দ্র মোদি সরকার, আবার তা ফিরিয়ে আনা উচিত বলে মন্তব্য করেন কঙ্গনা। হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনের মুখে কঙ্গনার সেই মন্তব্য বিজেপি-রও মনঃপুত হয়নি। কৃষক আন্দোলনে ধর্ষণ, খুন হয়েছে বলে যে মন্তব্য করেন তিনি, তা নিয়েও প্রকাশ্যে তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষভ উগরে দেন দলীয় নেতৃত্বের একাংশ। তাতে একরকম বাধ্য হয়ে ক্ষমা চেয়ে নেন কঙ্গনা। কিন্তু ফের বিতর্ক বাধালেন তিনি।