কর্ণাটকের রায়চুর জাম্বালাদিনি রোডের পাশে বিজানাগেরা গ্রামের ৬০ বছর বয়সী এক ভিখিরি স্থানীয় অঞ্জনেয়স্বামী মন্দিরের সংস্কারের জন্য ১.৮৩ লক্ষ টাকা দান করেছেন। সেই ভিখিরির নাম জানা গিয়েছে রঙ্গাম্মা যিনি নাকি বিগত ৬ বছর ধরে ভিক্ষা করে অল্প অল্প করে এই টাকা সঞ্চয় করেছেন। খুব সামান্য টাকা ভিক্ষা করে আয় করতেন রঙ্গাম্মা, আর তা থেকেই অল্প অল্প করে এই টাকা জমিয়েছিলেন তিনি।
মূলত অন্ধপ্রদেশের বাসিন্দা রঙ্গাম্মা গত ৩৫ বছর ধরে বিজানাগেরায় বসবাস করছিলেন, ভিক্ষা করেই নিজের পেট চালান তিনি। একটি সংবাদ প্রতিবেদন অনুসারে এলাকার মোটরচালক, অটো চালক ও দোকানদারদের কাছে তিনি খুবই পরিচিত, যারা তাঁকে প্রায়ই ১০, ২০ বা ১০০ টাকা দিয়ে থাকেন। জানা গিয়েছে রঙ্গাম্মা গত ৬ বছর ধরে নিজের ভিক্ষা করে পাওয়া টাকা থেকে অল্প অল্প করে টাকা সরিয়ে রেখে তিনটি আলাদা আলাদা বস্তায় জমাচ্ছিলেন। কয়েক সপ্তাহ আগে গ্রামবাসীরা যারা তাঁকে নিয়মিত খাবার ও পোশাক সরবরাহ করত, তারা রঙ্গাম্মার জন্য ৪ ফুট বাই ৫ ফুটের একটি টিনের ছাদের সাধারণ আশ্রয় বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আর এই ঘর বানানোর জন্য রঙ্গাম্মা নিজেই তাঁর সঞ্চয়ের থেকে ১ লক্ষ টাকা দিতে চেয়েছিলেন।
সেই টাকায় ঘর তৈরি হয়ে যাওয়ার পরে রঙ্গাম্মা যখন আগের ঝুপড়ি ছেড়ে সেই ঘরে গিয়ে থাকতে শুরু করে, তখন গ্রামবাসীরা সেই টাকা ভর্তি তিনটে ব্যাগ আবিষ্কার করে তাঁর ঝুপড়ি থেকে। আর তাঁকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান যে এই টাকা তিনি মন্দিরে দান করার জন্য জমিয়ে রেখেছিলেন এতদিন ধরে। গ্রামের প্রবীণরা সেই টাকা এবার একত্রে বসে গুণতে শুরু করেন। ২০ জনেরও বেশি লোক দিনে ৬ ঘণ্টা ধরে কাজ করে টাকা গোনেন, দেখা যায় তাঁর কাছে জমেছে ১ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা। অতিরিক্ত ৬ হাজার টাকার নোট স্যাঁতসেঁতে হয়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অন্যদিকে অঞ্জনেয়স্বামী মন্দির কমিটির সচিব বাসবরাজ যাদব জানিয়েছেন যে রঙ্গাম্মার ইচ্ছানুসারেই তাঁর দান করা সমস্ত টাকা মন্দির সংস্কারের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। সম্প্রতি মন্দিরটি সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে এবং রঙ্গাম্মাকে তাঁর অসাধারণ অবদানের জন্য সম্মানিত করা হয়েছে, যা প্রমাণ করে কীভাবে প্রভূত সম্পদ থেকেও বিনয় ও উদারতা আসতে পারে।