নয়া দিল্লি: পহেলগাঁও সন্ত্রাস এবং তার প্রেক্ষিতে চলতে থাকা ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বের আবহে রেলকর্মীদের আরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিল এদেশের রেলবোর্ড। বিশেষ করে যে অংশে রেললাইন পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সীমান্তের কাছে, সেখানে বাড়তি সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লোকো পাইলট, ট্রেন ম্যানেজার, ট্র্যাকম্যান, স্টেশন মাস্টার, টিকিট চেকিং স্টাফ-সহ সমস্ত ফ্রন্টলাইন কর্মীদের অস্বাভাবিক কিছু দেখলেই দ্রুত উপরমহলে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। RPF, GRP-কে BSF এবং অন্যান্য সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে নিয়মিত টহলদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পহেলগাঁও সন্ত্রাসের ১১ দিন। এখনও অধরা হামলাকারী জঙ্গিরা। সন্ত্রাসবাদীদের খোঁজে উপত্যকাজুড়ে আরও চলছে চিরুনি তল্লাশি। বিভিন্ন জঙ্গলে ও দুর্গম এলাকায় আজও যৌথ অভিযান চালাচ্ছে ভারতীয় সেনা ও জমমু-কাশ্মীর পুলিশ। আজও কাশ্মীরে রয়েছেন NIA-র ডিজি সদানন্দ দাতে। এদিন পহেলগাঁও সন্ত্রাসের তদন্তকারী আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈসরনে ২৬ জনকে খুনের তদন্ত করছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা NIA. গতকাল বৈসরনে গিয়ে ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখেন NIA-র ডিজি সদানন্দ দাতে। পহেলগাঁওয়ের CRPF ক্যাম্পে শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি।
পাকসেনার লাগাতার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের কারণে LOC বরাবর নিরাপত্তা আরও জোরদার করেছে ভারত। এদিন শ্রীনগরের আকাশ দিয়ে দক্ষিণ কাশ্মীরের দিকে ঘন ঘন সেনাবাহিনীর চপার যেতে দেখা গেছে। ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলার পর থেকে এখনও কার্যত পর্যটক শূন্য কাশ্মীর।
এদিকে, ভারতের প্রত্যাঘাতের আশঙ্কায় ত্রস্ত পাকিস্তানের জমমু-কাশ্মীরে উস্কানির চেষ্টা চলছেই। পহেলগাঁও সন্ত্রাসের পর থেকে, সংঘর্ষবিরতি চুক্তি ভেঙে টানা ৮ দিন পাক সেনার গুলিবর্ষণ। রাত হলেই উপত্যকায় LOC-র ওপার থেকে বিনা প্ররোচনায় গুলি ছুড়ছে পাক সেনা। মধ্যরাতে কুপওয়াড়া, বারামুলা, পুঞ্চ, নৌশেরা এবং আখনুর সেক্টর লক্ষ্য করে নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপার থেকে গুলি চালায় পাক বাহিনী। পাল্টা জবাব দেয় ভারতীয় সেনা।
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা নিয়ে গোয়েন্দাদের হাতে নতুন তথ্য। সূত্রের খবর, মার্চের গোড়াতেই গুলমার্গের জঙ্গলে ঘাঁটি গাড়ার পরিকল্পনা করেছিল দুই পাক জঙ্গি মুসা ও আলি। কিন্তু ২০২৪-এর অক্টোবরে সেনা কনভয়ের ওপর হামলার পর নিরাপত্তার কড়াকড়ি থাকায় পরিকল্পনা বাতিল হয়। এরপরই দক্ষিণ কাশ্মীরকে বেছে নেয় পাক জঙ্গিরা। অনন্তনাগের বিজবেহরার বাসিন্দা লস্কর জঙ্গি আদিল ঠোকর ওরফে আদিল গুরির সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা ট্যুরিস্ট স্পটে হামলার ছক কষে। হাপতনার এলাকার কোকরনাগ জঙ্গলে ঘাঁটি গাড়ে, সেখানে অস্থায়ী ক্যাম্প বানিয়ে ফেলে। বেশ কয়েকবার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ধরা পড়তে গিয়েও বেঁচে যায় তারা। এপ্রিলের মাঝামাঝি আদিল এবং আরেক স্থানীয় জঙ্গি, ২ জনে মিলে পহেলগাঁও যায়। সেখানে প্রায় সমস্ত ট্যুরিস্ট স্পট রেকি করে। এরপর সব দিক খতিয়ে দেখে বৈসরন ভ্যালিতে পর্যটকদের ওপর হামলার ছক।