বিজেন্দ্র সিংহ, শ্রীনগর: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর নিরাপত্তার চাদরে মোড়া উপত্যকা। জম্মু-কাশ্মীরে জারি সতর্কতা। চলছে চিরুনি তল্লাশি। ড্রোনের মাধ্যমে কড়া নজরদারির ব্যবস্থা। জঙ্গি হামলার পর একেবারে শুনশান ভূ-স্বর্গ। 

জঙ্গি হামলায় মৃত্যু উপত্যকা পহেলগাঁও। ভূস্বর্গে বেড়াতে এসে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা নিয়ে দলে দলে ফিরে যাচ্ছেন পর্যটকরা। গতকালের জঙ্গি হানা প্রাণ কেড়েছে ২৬ জনের। আজ গোটা এলাকা শুনশান। দোকানপাট বন্ধ। বৈসরণ যাওয়ার রাস্তা পুরো ফাঁকা। ঘরে ঘরে ঢুকে তল্লাশি চালাচ্ছে ভারতীয় সেনা। পহেলগাঁওয়ের জঙ্গলে রাষ্ট্রীয় রাইফেলস, CRPF এবং জম্মু কাশ্মীর পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। আকাশপথেও চলছে নজরদারি, উড়ছে চপার। পহেলগাঁওয়ে ঢোকার মুখে রয়েছে CRPF-এর চেকিং পয়েন্ট। বারামুলায় প্রতিটি গাড়ি থামিয়ে নথি পরীক্ষা করা হচ্ছে। অনন্তনাগেও নিরাপত্তা আঁটসাঁট করা হয়েছে। জঙ্গিদের খোঁজে গোটা কাশ্মীরজুড়েই চলছে চিরুনি তল্লাশি। হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। 

পর্যটকশূন্য কাশ্মীরের এই ছবি মেনে নিতে পারছেন না, স্থানীয়রাই। এই আবহে প্রতিবাদ নেমেছে কাশ্মীর বাসীদের একাংশ। পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলার ঘটনায় রাস্তায় নেমে চলছে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। গতকাল মোমবাতি মিছিল করেন তাঁরা। আর এদিন ডাল লেকের পাশে প্রতিবাদ মিছিল করেন বোট ওনার্সরা। তাঁরা বলছেন, 'পর্যটকরা আমাদের ভগবান।' রীতিমতো পোস্টার নিয়ে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন তাঁরা। 

এদিকে কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় মৃত্যুমিছিলের ঘটনায় পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলে সন্দেহভাজনের স্কেচ প্রকাশ করল জম্মু কাশ্মীর পুলিশ। আসিফ ফৌজি, সুলেমান শা এবং আবু তালহার ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। সূত্রের খবর, পর্যটকদের ওপর গুলি চালিয়েছিল ৪ জঙ্গি।আরও ৩ জঙ্গি পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছিল। এদের মধ্যে আদিল গুরু নামে এক পাক জঙ্গি কয়েক বছর আগে কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ করে। ফের ২০১৮ সালে পাকিস্তানে চলে যায়।হামলাকারী জঙ্গিদের মধ্যে একজনের নাম ছিল আসিফ শেখ। আদিল ও আসিফের সঙ্গে দুই পাক জঙ্গিও ছিল। হামলার দায় স্বীকার করেছে লস্কর-ই-তৈবার সঙ্গে যুক্ত দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট TRF.সূত্রের খবর, প্রাথমিক তদন্তে এও জানা গেছে, জঙ্গিদের হেলমেটে ক্যামেরা লাগানো ছিল। নিজেরাই ভিডিও করে চক্রীদের পাঠাচ্ছিল হামলাকারীরা। ৩ জঙ্গির কাজ ছিল মহিলা-পুরুষদের আলাদা করে তাদের ধর্মীয় পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত করা। পর্যটকদের ওপর স্নাইপার হামলাও হয়েছে। রীতিমতো রেকি করেই বৈসরণ উপত্যকাকে হামলাস্থল হিসেবে বেছে নিয়েছিল জঙ্গিরা। যাতে উদ্ধারকাজে দেরি হয় এবং মৃতের সংখ্যা বাড়ে।