Kashmir Incident: পহেলগাঁওয়ের বৈসরণ, 'মিনি সুইৎজারল্যান', কাশ্মীর ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের 'মাস্ট ভিজিট প্লেস'। ২২ এপ্রিল এই অপূর্ব সুন্দর জায়গাতেই ঘুরতে গিয়েছিলেন পর্যটকরা। তাদের উপরেই হল জঙ্গি হামলা। গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হল শরীর। বৈসরণের পাশের জঙ্গল থেকে স্থানীয় পোশাকে বেরিয়ে এসেছিল জঙ্গিরা। হাতে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র। মুখ ঢাকা। আচমকাই পর্যটকদের নাম-পরিচয় জানতে চাওয়া হয়। তারপর ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয় গুলিবৃষ্টি। এই ভয়াবহ হামলার প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে উঠে এসেছে শিউরে ওঠার মতো এমন তথ্যই। 

জঙ্গিদের বুলেটে এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে যাওয়ার ভয়ে তখন যে যেদিকে পারেন ছুটছেন, একটু আশ্রয়ের আশায়, ঠিক সেই মুহূর্তেই সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিল স্থানীয় এক যুবক। সৈয়দ আদিল হুসেন শাহ, পেশায় টাট্টু ঘোড়ার চালক। ঘোড়ায় চড়িয়ে পর্যটকদের বৈসরণে নিয়ে আসাই তাঁর কাজ। ওই এলাকার কাছে একটি গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা রয়েছে। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে কিংবা এই টাট্টু ঘোড়ায় চড়েই মূল উপত্যকায় যেতে হয়। অন্যান্য দিনের মতোই এই গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা থেকে পর্যটকদের বৈসরণের মূল উপত্যকায় নিয়ে গিয়েছিল সৈয়দ। আচমকাই জঙ্গি হামলা হয়। সেই সময় সকলে যখন প্রাণ বাঁচাতে এদিক-ওদিক পালাচ্ছেন, এই যুবক তেড়ে যান জঙ্গিদের দিকে। এক জঙ্গির হাত থেকে কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন তার রাইফেল। আর তখনই তাঁকে ঝাঁঝরা করে দেয় জঙ্গির রাইফেল থেকে ছুটে আসা বুলেট। 

সৈয়দের পরিবার তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বভাবতই শোকস্তব্ধ। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিল সৈয়দ। তাঁর পরিবার ন্যায়বিচার চায়। সেই সঙ্গেই অন্ধকার ভবিষ্যতের আশঙ্কায় দিন গোনা শুরু করেছেন তাঁরা। পরিবারের রুজি-রুটি যাঁর উপর নির্ভর করত, সেই আর নেই দুনিয়াতে। এবার কী হবে? এই একটাই প্রশ্ন ঘুরছে সৈয়দের পরিবারের সকলের মনে। সংবাদসংস্থা এএনআই- কে সৈয়দের বাবা জানিয়েছেন, রোজকার মতো গতকালও কাজে বেরিয়েছিল সে। ৩টে নাগাদ সৈয়দের পরিবারের কানে আসে জঙ্গি হামলার খবর। সঙ্গে সঙ্গেই ফোন করা হয় সৈয়দকে। কিন্তু ফোন সুইচ অফ ছিল তাঁর। এরপর বিকেল ৪টে ৪০ মিনিট নাগাদ সৈয়দের ফোন চালু হলেও কোনও জবাব আসেনি। থানায় ছুটে যায় সৈয়দের পরিবার। সেখানেই ছেলের মর্মান্তিক পরিণতির কথা জানতে পারেন পরিবারের সদস্যরা। যারা এর জন্য দায়ী তাদের ফুল ভুগতেই হবে, এটাই দাবি মৃত যুবকের পরিবারের।