নয়াদিল্লি : পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার মুখ থেকে যাঁরা বেঁচে ফিরেছেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলে তথ্য সংগ্রহ করছে তদন্তকারী সংস্থা। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবৃতি অনুযায়ী, স্বর্গীয়-সৌন্দর্যে ঘেরা বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গি হামলার সময় বেঁচে ফেরার কোনও পথই কার্যত খোলা ছিল না । কারণ, প্রবেশ ও প্রস্থান পথ অবরুদ্ধ করে রেখেছিল জঙ্গিরা। এককথায় পাকিস্তানি জঙ্গিরা পুরো ছক কষে, আটঘাঁট বেধেই হামলায় নেমেছিল। 

সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে-র খবর অনুযায়ী, চার জন জঙ্গি হামলা চালিয়েছিল বৈসরনে। এর মধ্যে দু'জন এসেছিল প্রবেশ পথ বা এন্ট্রি গেট দিয়ে। একজনকে রাখা হয়েছিল প্রস্থানের রাস্তা অর্থাৎ এক্সিট গেটের কাছে। তদন্তকারী সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, আরও এক জঙ্গি সম্ভবত জঙ্গলে লুকিয়ে ছিল। সম্ভবত বাকি তিনজনকে সাহায্য করার জন্য। তিন জঙ্গিই গুলি চালিয়েছিল। জঙ্গিদের মধ্যে দু'জন সামরিক পোশাকে ছিল, আর তৃতীয়জন ঐতিহ্যবাহী কাশ্মীরি ফেরান পরে ছিল।

এক্সিট গেটে প্রথম গুলি চালানো হয়। যার পরেই পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কে পর্যটকরা এন্ট্রি গেটের দিকে দৌড়ে যায়। যদিও তাঁদের খুন করতে ইতিমধ্যেই সেখানে হাজির ছিল দুই জঙ্গি। এন্ট্রি গেটে, জঙ্গিরা সব পর্যটককে জড়ো করে । এরপর মহিলাদের পুরুষদের থেকে আলাদা হয়ে যেতে বলা হয়। যদিও পর্যাটকরা তা শুনতে চাননি। তখন হিন্দুদের মুসলিমদের থেকে আলাদ হয়ে যেতে বলা হয়। তাও মেনে নেননি পর্যটকরা। তখন পর্যটকদেরকলমা পড়তে বলা হয়। এরপরই শুরু হয় গুলি চালানো।

নৌবাহিনীর অফিসার বিনয় নারওয়াল যিনি এন্ট্রি গেট দিয়ে ঢুকেছিলেন, তাঁকেই প্রথম গুলি করে খুন করে জঙ্গিরা। বহু সংখ্যক মানুষ চা ও ভেলপুরির স্টলের কাছে ছিলেন। তাই সেখানেই বেশ প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। হামলা চালানোর পর, পার্কের বাঁ দিকে থাকা দেওয়াল টপলে পালায় জঙ্গিরা।

এদিকে পহেলগাঁও কাণ্ডের সাতদিনের মাথাতেও অধরা জঙ্গিরা। হামলাকারী জঙ্গিদের স্কেচ সামনে আসলেও ধরা পড়েনি কেউ। এই আবহে মাথাচাড়া দিচ্ছে ২টি সম্ভাবনা। এক, তবে কি কাশ্মীরের উপত্য়কাতেই কোথাও লুকিয়ে রয়েছে জঙ্গিরা ? নাকি পাক অধিকৃত কাশ্মীরে পালিয়ে গিয়েছে তারা ? জঙ্গিদের ধরতে ইতিমধ্য়েই চলছে তল্লাশি অভিযান। বিভিন্ন জঙ্গল-সহ স্থানীয়দের বাড়িতে ঢুকে তল্লাশি চালাচ্ছে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ এবং সেনা বাহিনী। অন্য়দিকে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। Pahalgam Incident