পাথানানথিটা: গ্রামের স্কুলে খাবার মেলে বটে। কিন্তু রোজ রোজ উপমা কারই বা ভাল লাগে। মায়ের কাছেই সেই অনুযোগ তুলে ধরছিল একরত্তি। আর তাতেই কেরলের অঙ্গনওয়াড়ির মেনু বদলে গেল। উপমার পরিবর্তে অঙ্গনওয়াড়িতে এখন থেকে বিরিয়ানি খাওয়ানো হবে বলে জানাল রাজ্য সরকার। (Kerala Anganwadi Menu)

কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ মিড ডে মিলে বিরিয়ানি খাওয়ানোর কথা জানিয়েছেন। মঙ্গলবার অঙ্গনওয়াড়ির মিড ডে মিলের নতুন মেনু সামনে আনেন তিনি। বীণা জানান, এখন থেকে অঙ্গনওয়াড়ির মেনুতে এগ বিরিয়ানি, পোলাও, ডালের পায়েস, সোয়া ড্রাই কারি এবং নিউট্রি লাড্ডু থাকবে। শঙ্কুর জন্যই এমন সম্ভব হল বলে মনে করছেন অনেকে। (Biryani in Anganwadi)

মাস তিনেক আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় অঙ্গনওয়াড়িতে পাঠরত একটি শিশুর ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। শঙ্কু নামের ওই শিশুর সঙ্গে তার মায়ের কথোপকথন মনে বেঁধে সকলেরই। ভিডিও-য় দেখা যায়, ছোট্ট শঙ্কুকে বিরিয়ানি খাইয়ে দিচ্ছেন মা। সেই ফাঁকে টুকটাক কথা চলছে দু’জনের মধ্য়ে। বিরিয়ানি খেতে খেতে শঙ্কু বলে, “আমি অঙ্গনওয়াড়িতে ‘বিরনানি’ (বিরিয়ানি), ‘পরিচা কোঝি’ (চিকেন ফ্রাই) খেতে চাই। উপমা নয়’।

শঙ্কুর মা নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওটি আপলোড করেন। ভিডিও-য় ছেলেকে আশ্বাসও দেনব তিনি। জানান, ছেলের যে রোজ রোজ উপমা খেতে ভাল লাগছে না, তা স্কুলে জানাবেন। ভিডিও-য় দেখা যায়, মাথায় হেলমেট পরা অবস্থাতেই শঙ্কু মায়ের হাতে খাবার খাচ্ছিল। স্কুল থেকে ফিরে বিরিয়ানি পেয়েই সে নিজের অনুযোগ শোনাচ্ছিল বলে ধরে নেন সকলে। 

শঙ্কুর মা জানান, বাড়িতে বিরিয়ানি রান্না হয়েছিল। সেটা ছেলেকে খাইয়ে দিচ্ছিলেন তিনি। ছেলে যে অনুযোগ করছিল, ক্যামেরায় রেকর্ড করছিলেন। পরে সেটাই ইনস্টাগ্রামে আপলোড করেন। শঙ্কুর ওই ভিডিও ভাইরাল হতে সময় লাগেনি, যা চোখে পড়ে কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণারও। তার পরই রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ির মেনুতে রদবদল ঘটল।

নতুন মেনু ঘোষণা করতে গিয়ে বীণা জানান, সমস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে একই খাবার মিলবে। স্বাদ এবং পুষ্টির কথা মাথায় রেখেই তৈরি করা হয়েছে মেনু। চিনি, লবণ কমিয়ে প্রোটিন বাড়ানো হয়েছে। বীণা রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রীও। সকালে, দুপুরেও খাবার পাবে শিশুরা। পাশাপাশি, টুকটাক স্ন্যাক্সও দেওয়া হবে। আগে সপ্তাহে দু’বার দুধ ও ডিম দেওয়া হত, এখন থেকে তিন দিন করে মিলবে। 

শঙ্কুর ওই ভিডিও দেখার পর ফেব্রুয়ারি মাসেই অঙ্গনওয়াড়ির মেনু পাল্টানোর কথা জানিয়েছিলেন বীণা। সেই সময় সাধারণ মানুষজনও শঙ্কুর আবদার মেটানোর পক্ষে ছিলেন। বীণার এই ঘোষণার পর শঙ্কুর খুশি বাধ মানছে না।