কোচি: সকাল সকাল প্রার্থনাসভায় ধারাবাহিক বিস্ফোরণ। তাতে কেঁপে উঠল কেরলের কোচি। এই বিস্ফোরণের নেপথ্যে নাশকতার যোগ রয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। আর সেই আবহেই আলোচনায় উঠে আসছে হামাস নেতা খালেদ মাশালের নাম (Khaled Mashal)। প্যালেস্তাইনের সমর্থনে সম্প্রতি মিছিল বেরিয়েছিল কেরলে। আয়োজন হয়েছিল সভার (Kerala Blast Kochi)। সেখানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তৃতা করেন খালেদ। তার পরই রবিবার সকালে এই বিস্ফোরণ। দু'টি ঘটনার মধ্যে কোনও সংযোগ রয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখার দাবি উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। (Kerala Blast)
শুক্রবার কেরলের মলপ্পুরমে প্যালেস্তাইনের সমর্থনে মিছিল বেরোয়। জামাত-ই-ইসলামি সংগঠনের যুব সংগঠনের তরফে ওই মিছিল এবং একটি সভার আয়োজন করা হয়। ভার্চুয়াল মাধ্যমে সেখানে বক্তৃতা করেন খালেদ, তার যে ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে প্যালেস্তিনীয় যোদ্ধাদের পক্ষে সমর্থন জোগাড় করতে শোনা যায় খালেদকে। 'ইহুদি সন্ত্রাসের' হাত থেকে আল আকসা মসজিদ উদ্ধারের কথা বলেন তিনি। ১৯৬৭ সালে ইজরায়েলে দক্ষিণপন্থী ক্ষমতা কায়েম হওয়ার পর থেকেঅ আল আক,সা মসজিদটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে দাবি করেন।
জামাত-ই-ইসলামি সেন্ট্রাল কাউন্সিলের সদস্য আব্দুসালেম আহমেদ ওই সভার আয়োজন করেন। প্যালেস্তাইনে বর্ণবিদ্বেষী শক্তি সংগঠিত ভাবে গণহত্যা চালাচ্ছে বলেও রব ওঠে ওই সভায়। ভারতও ওই সংগঠিত শক্তির অংশ বলেও দাবি করা হয়। সভা থেকে ওই ভিডিও সামনে আসতেই বিতর্ক শুরু হয়। ওই সভা এবং মিছিলের আয়োজনে অনুমোদন দেওয়ায় প্রশ্নের মুখে পড়ে পিনারাই বিজয়নের সরকার।
বিজেপি-র তরফে অভিযোগ ওঠে, প্যালেস্তাইন বাঁচাও ধ্বনির আড়ালে হামাসকে মহিমান্বিত করে দেখানোর চেষ্টা চলছে। হামাস একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। তাদের সঙ্গে সংযোগ থাকা প্রত্যেকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা উচিত বলেও দাবি তোলে বিজেপি। কেরলের বিজেপি সহ-সভাপতি ভিটি রেমা বলেন, "ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দেশে ইসলামি সন্ত্রাসবাদীরা নিজেদের আসল চেহারা দেখাচ্ছে। প্রত্যেকে জানে, হামাসই ইজরায়েলকে আক্রমণ করে।"
ওই সভার আয়োজনে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান কেরলের বিজেপি সভাপতি কে সুরেন্দ্রন। পিনারাই সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, "মলপ্পুরমের সভায় হামাস নেতা খালেদ মাশালের ভাষণ অত্যন্ত উদ্বেগজনক। পিনারাই বিজয়নের কেরল পুলিশ কোথায়? প্যালেস্তাইন বাঁচাওয়ের নামে সন্ত্রাসীদের যোদ্ধা হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।" গোটা ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
রবিবার ধারাবাহিক বিস্ফোরণের নেপথ্যে নাশকতা থাকতে পারে বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে টিফিন বক্সের ভিতর রাখা বিস্ফোরকও উদ্ধার হয়েছে বলে খবর। কিন্তু কে বা কারা এর নেপথ্যে রয়েছে, এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। সেই আবহে কেরলের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর। কেরল হত্যা এবং হিংসাত্মক মানসিকতার শিকার হচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।