তিরুঅনন্তপুরম: কেরলে ফের মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবার হানা। এবার সংক্রমিত ১৭ বছরের এক কিশোর। সুইমিং পুলে স্নান করতে গিয়েই ওই কিশোর সংক্রমিত হয় বলে খবর। সেই সুইমিং পুল ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দিয়েছে কেরল সরকার। সেই সঙ্গে যে সরকারি পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়েছে, সেই অনুযায়ী, কেরলে এখনও পর্যন্ত ৬৭টি এমন সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যার মধ্যে ১৮ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। (Brain Eating Amoeba)
মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবার এই সংক্রমণকে অ্যামিবিক মেনিঙ্গোএনসেফালাইটিস বলা হয়। এটি এক ধরনের বিরল সংক্রমণ, সেই সঙ্গে প্রাণঘাতীও। সম্প্রতি তিরুঅনন্তপুরমে ১৭ বছর বয়সি এক কিশোরীরে মস্তিষ্কে অ্যামিবার সংক্রমণ ধরা পড়ে। জানা যায়, বন্ধুদের সঙ্গে আক্কুলাম ট্যুরিস্ট ভিলেজের সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে গিয়েছিল ওই কিশোর। (Amoebic Meningoencephalitis)
ওই সুইমিং পুলটি ইতিমধ্য়েই বন্ধ করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। সুইমিং পুলের জলের নমুনাও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। সেই আবহেই কেরল সরকারের ইন্টিগ্রেটেড ডিজিস সার্ভেল্যান্স প্রোগ্রামের ওয়েবসাইটে যে তথ্য় প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে অ্যামিবিক মেনিঙ্গোএনসেফালাইটিস নিয়ে কিছু তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, চলতি বছরের ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাজ্যে ৬৭টি অ্যামিবিক মেনিঙ্গোএনসেফালাইটিস রোগীর সন্ধান মিলেছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৮ জন রোগীর।
অ্যামিবিক মেনিঙ্গোএনসেফালাইটিস নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করছে কেরল সরকার। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানিয়েছেন, অ্যামিবিক মেনিঙ্গোএনসেফালাইটিসের বিরুদ্ধে সার্বিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। রাজ্যের নদী, পুকুর, সুইমিং পুল পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি, মানুষজনকে সাবধান হতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। বীণা বলেন, “অ্যামিবিক মেনিঙ্গোএনসেফালাইটিসের বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে আমাদের। দূষিত জলে কোনও ভাবেই মুখ ধোওয়া যাবে না, স্নান করা যাবে না। যেখানে গরু-বাছুর স্নান করানো হয়, তেমন জলে না নামাই শ্রেয়।”
বীণা আরও জানিয়েছেন, কুয়ো পরিষ্কারের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানসম্মত পথ অবলম্বন করতে হবে, ঠিকঠাক ক্লোরিন প্রয়োগ করতে হবে, সুইমিং পুল এবং ওয়াটার থিম পার্কগুলি জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে। বাড়িতেও যে জল জমিয়ে রাখা হয়, তা নিয়ে ভাবতে হবে সকলকে। নাক দিয়ে মস্তিষ্কে পৌঁছে যাচ্ছে অ্যামিবা। তাই বাকে যাতে জল না ঢোকে, সেব্যাপারে সতর্ক হতে হবে সকলকে।
গত সপ্তাহেই কেরলে অ্যামিবিক মেনিঙ্গোএনসেফালাইটিস এক রোগীর মৃত্য়ু হয়, যা গত একমাসে পঞ্চম এমন ঘটনা। মলপ্পুরমের বাসিন্দা, ৫৬ বছর বয়সি শোভনা মারা যান। কোঝিকোড় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। ওই একই হাসপাতালে ভর্তি থাকা ৪৫ বছর বয়সি রথীশ নামের এক ব্যক্তিও একই রোগে মারা গিয়েছেন।