নিউ দিল্লি : ধীরে ধীরে সংক্রমণ কমছে দেশে। এদিকে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে ব্যাপকহারে টিকাকরণ-ই লক্ষ্য সরকারের। কিন্তু, ভ্যাকসিনের ঘাটতির কারণে বিভিন্ন জায়গায় টিকাকরণ কর্মসূচি ব্যাহত হচ্ছে। এই অবস্থায় গতকালই প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, নাকের মাধ্যমে কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়া নিয়ে দেশে গবেষণা চলছে। এই গবেষণা সফল হলে টিকাকরণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা যাবে।


কী এই ন্যাসাল ভ্যাকসিন ?


সূচ ব্যবহার না করে নাকের মাধ্যমে এই ধরনের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। নাকের অভ্যন্তরীণ ভাগ হয়ে এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। 


গত বছর বিজ্ঞানীরা একটি ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছিলেন। যেটি সিঙ্গল ডোজের ও নাকের মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়। ইঁদুরের মধ্যে কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে কার্যকর হয়েছিল এই ভ্যাকসিন। 


সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(WHO)-র চিফ সায়েন্টিস্ট সৌম্য স্বামীনাথন বলেন, "ভারতে নাকের মাধ্যমে ভ্যাকসিন প্রয়োগের ট্রায়াল চলছে। এটা শিশুদের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিতে পারে।" প্রসঙ্গত, ভারত বায়োটেক ইন্ট্রান্যাসাল ভ্যাকসিন- BBV154 ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগের পর্বে আছে।



এই ভ্যাকসিনের উপকারিতা কী ?


স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভ্যাকসিনের সুবিধা হচ্ছে, এটি নন-ইনভেসিভ (আক্রমণাত্মক নয়)। অর্থাৎ, ভ্যাকসিনের ডোজ নেওয়ার জন্য সূচের প্রয়োজন নেই। এমনকী এটা প্রয়োগের জন্য কোনও স্বাস্থ্যকর্মীরও প্রয়োজন নেই।


ওয়াশিংটনের স্কুল অফ মেডিসিন বলছে, এই ইন্ট্রান্যাসাল ভ্যাকসিনে জীবাণুর দুর্বল আকার ব্যবহার করা হয়। 


কীভাবে এই ভ্যাকসিন কাজ করে ?


শিশু বিশেষজ্ঞ ও IAP কমিটি অন ইম্যুনাইজেশন-এর প্রাক্তন আহ্বায়ক চিকিৎসক বিপিন এম বশিষ্ঠ বলেন, ইন্ট্রান্যাসাল ভ্যাকসিনের সবথেকে সুবিধা এই যে, এই ভ্যাকসিন ভাইরাসের প্রবেশপথ অর্থাৎ নাকে শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। এটা ভাইরাসের সংক্রমণে সুরক্ষা দেবে। এই পথে যদি ভাইরাসের প্রবেশ আটকানো যায়, তবে তা ফুসফুসের ক্ষতি করতে পারবে না। 


এখনকার ভ্যাকসিনের থেকে কোথায় আলাদা ?


গবেষণা অনুযায়ী, বর্তমানে ব্যবহৃত কোভিড ভ্যাকসিন এবং ন্যাসাল স্প্রে-উভয়েই কার্যকর। তবে, নাকে ভ্যাকসিন স্প্রে মূলত শিশুদের জন্য। কিন্তু চিকিৎসকরা দেখেছেন, এটা প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রেও কার্যকর।