রুমা পাল, কলকাতা : রোগী আছেন বাড়িতে। কিন্তু তাঁর পালস রেট, রক্তচাপ থেকে অক্সিজেন স্যাচুরেশন, প্রতি মুহূর্তের আপডেট ফুটে উঠছে হাসপাতালের কন্ট্রোলরুমে! ভয়ঙ্কর মহামারী পরিস্থিতিতে যখন বেডের আকাল, তখন প্রযুক্তির সাহায্যে দূর চিকিৎসার এই ব্যবস্থা করেছে ILS হাসপাতাল। 


হোম আইসোলেশনে থাকা করোনা রোগীর ম্যাট্রেসের নীচে বিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে একটি বেল্ট, যা আদতে একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস। বৈদ্যুতিন বেল্টের সঙ্গে করোনা রোগীকে দেওয়া হচ্ছে একটি করে ওয়াইফাই সিস্টেম। আর তার মাধ্যমেই করোনা রোগীর শারীরিক অবস্থার ওপর নিরন্তর নজর রাখছে হাসপাতাল। ILS হসপিটালস্-এর গ্রুপ ভাইস প্রেসিডেন্ট দেবাশিস ধর জানান, শুধু শরীরের নানা প্যারামিটার মনিটরিং নয়, ডাক্তারের পরামর্শ, ডায়াটেশিয়ানের পরামর্শ সবই মিলবে।


হাসপাতালের কন্ট্রোলরুমের ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে কাজ করবে এই সিস্টেম। রাজ্যে ILS হাসপাতালের তিনটি শাখা রয়েছে। সল্টলেক, হাওড়া ও দমদম। তার মধ্যে হাওড়া ও দমদম শাখায় এই পরিষেবা চালু রয়েছে। পাশাপাশি, সল্টলেকেও বাড়িতে থাকা করোনা রোগীদের হাসপাতাল থেকে পরিষেবা দেওয়ার কথা ভাবছে ILS কর্তৃপক্ষ।  হোম কোয়ারেন্টিনের ১৪ দিন ২৪ ঘণ্টা হাসপাতালের পর্যবেক্ষণে থাকার খরচ সাড়ে ১২ হাজার টাকা। 


করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে যখন বেসামাল গোটা দেশ, সব জায়গায় বেডের আকাল, ঘরে ঘরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে - তখনই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দূর নিয়ন্ত্রিত চিকিৎসা পরিষেবার আয়োজন করেছে ILS হাসপাতাল। ঘরবন্দি করোনা রোগীর আঙুলে লাগানো পালস অক্সিমিটার। তার প্রতি মুহূর্তের আপডেট পৌঁছে যাচ্ছে হাসপাতালের কন্ট্রোলরুমে। পালস রেট থেকে অক্সিজেন স্যাচুরেশন, কম্পিউটারের পর্দায় ফুটে উঠছে নানা তথ্য। এ যেন ঘরে থেকেও হাসপাতালে। রোগী শুয়ে আছেন নিজের বাড়িতে, ২৪ ঘণ্টা নজরদারি থেকে ও চিকিৎসা চলছে হাসপাতাল থেকে। 


গোটা দেশের মতোই পশ্চিমবঙ্গও এই মুহূর্তে কাবু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে। রোজই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমিত, মৃতের সংখ্যা। এই অবস্থায় যখন বেডের আকাল, তখন এভাবে দূর চিকিৎসার ব্যবস্থা নিঃসন্দেহে নতুন দিশা দেখাচ্ছে।