কলকাতা : ফের একবার রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত। এবার রাজ্যপালের কোচবিহার সফর নিয়ে তাঁকে কড়া চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। 'কয়েক দশকের প্রথা ভেঙে দুর্ভাগ্যজনক পদক্ষেপ' ঠিক এই ভাষাতেই চিঠি পাঠিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


রাজ্যপালের উদ্দেশে দু-পাতার চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, 'রাজ্যপালের ব্যক্তিগত বা সরকারি সফর রাজ্যকে জানিয়ে করার নিয়ম। কোচবিহার সফরে যাচ্ছেন, জানলাম সোশাল মিডিয়া থেকে। কয়েক দশকের প্রথা ভেঙে জেলা সফর করছেন। আপনার এই পদক্ষেপ দুর্ভাগ্যজনক।’


সদ্য বাংলার মসনদে তৃতীয়বারের জন্য বসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর চিঠিতে জুড়েছেন, ‘রাজ্য প্রশাসনকে এড়িয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করায় যায় না। ২৬ সেপ্টেম্বর দেওয়া পরামর্শও আপনি মানেননি। ক্রমাগত সেই অনুরোধ আপনি অগ্রাহ্য করেছেন। আবারও অনুরোধ, এই ধরনের পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকুন।'


গতকাল সন্ধেয় ট্যুইট করে বৃহস্পতিবার শীতলকুচি যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন রাজ্যপাল। ট্যুইট করে জগদীপ ধনকড় জানিয়েছিলেন, ১৩ মে বিএসএফ-এর হেলিকপ্টারে হিংসা কবলিত অঞ্চলগুলি পরিদর্শনে যাবেন। শীতলকুচি সহ কোচবিহারের বিভিন্ন হিংসাবিধ্বস্ত অঞ্চলে যাবেন তিনি। পাশাপাশি যে ট্যুইটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হ্যাশট্যাগে জুড়েছিলেন রাজ্যপাল।


রাজ্যপালের যে সফর নিয়ে গতকালই তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের কটাক্ষ করেছিলেন, 'ওসব ওনার কাজ নয়'। যদিও বিজেপি রাজ্যপালের এই সিদ্ধান্তের পক্ষেই দাঁড়িয়েছিল। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, এতে ভুল কিছু নেই, উনি যেতেই পারেন।



প্রসঙ্গত, রাজ্য-রাজ্যপালের মধ্যে সংঘাত নতুন নয়। একাধিক ইস্যুতে দ্বিতীয়বার ক্ষমতাসীন তৃণমূল সরকারের সঙ্গে বাগযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলেন রাজ্যপাল। এবারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয়বারের সরকার গঠনের সময় থেকেও রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সরব জগদীপ ধনকড়। রবীন্দ্রজয়ন্তীতে শুভেচ্ছা জানানোর মাঝেই রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সরব হয়েছিলেন রাজ্যপাল। যা নিয়েও পাল্টা প্রত্যুত্তরও দিয়েছিলেন রাজ্যের নেতারা।


এমনিতেই গত ১০ এপ্রিল থেকেই শীতলকুচি নিয়ে উত্তপ্ত থেকেছে রাজ্য রাজনীতি। রাজ্যে চতুর্থ দফার ভোটের দিন কোচবিহারের শীতলকুচির জোরপাটকির ১২৬ নম্বর বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয় চারজনের। আপাতত সেই ঘটনার তদন্ত করছে সিআইডি।