পার্থ প্রতিম ঘোষ,কলকাতা: শুক্রবার ভোর পাঁচটা। কাজ সেরে সল্টলেক থেকে বাইকে চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন তিলজলার এক যুবক। পেশায় ওয়েব ডিজাইনার। পার্ক সার্কাস কানেক্টরের সামনে শীতের ভোরে রাস্তা প্রায় সুনসান। আচমকাই পিছন থেকে তাঁর বাইকে ধাক্কা মারে একটি ট্যাক্সি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই রাস্তা আটকে দাঁড়ায় ওই ট্যাক্সি। এরপর যা হল, তা কল্পনার বাইরে। জোর করে বাইক থেকে নামিয়ে ওই যুবককে ট্যাক্সিতে তুলে নেয় কয়েকজন। কিছু বোঝার আগেই ট্যাক্সির আরোহী চার দুষ্কৃতী তাঁর শরীরে ছুরি ও রিভলভার ঠেকিয়ে ধরে। তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন রাস্তায় ট্যাক্সি নেয়ে ঘুরতে থাকে দুষ্কৃতীরা। কেড়ে নেওয়া হয় সঙ্গে থাকা নগদ ২১ হাজার টাকা।  অত্যাচারের এখানেই শেষ নয়।


এরপর দুষ্কৃতীরা মুক্তিপণও দাবি করে। তখনও শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরছে ওই ট্যাক্সি।


ট্যাক্সি যখন পঞ্চান্নগ্রামে, তখন টাকা ছিনতাই করা হয়। এরপর মুক্তিপণের দাবি। মুক্তি পেতে ওই ভোরেই ভাইকে দিয়ে তিন লক্ষ টাকা আনান ওই যুবক। এরপর কসবায় শপিং মলের কাছে ছেড়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। পুলিশ সূত্রে এমনটাই জানা গেছে।


খাস কলকাতায় পার্ক সার্কাস কানেক্টরের কাছে এভাবেই ফিল্মি কায়দায় ওয়েব ডিজাইনারকে অপহরণ করে গান পয়েন্টে রেখে টাকা হাতিয়ে ও মুক্তিপণ আদায় করে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। 


এই ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে শহরের নিরাপত্তা! এ ধরনের  দুষ্কৃতী তাণ্ডবের ঘটনায় আতঙ্কিত ওই  যুবক।


ঘটনার পর প্রগতি ময়দান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই যুবক। তদন্তে নেমে সিসি ক্যামেরার ফুটেজের সূত্র ধরে ট্যাক্সিটিকে শনাক্ত করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে ট্যাক্সি চালককে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে জেরা করে শনিবার সকালে পাকড়াও করা হয় এক যুবককে।বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ট্যাক্সিটিও।


পুলিশ জানিয়েছে,ধৃত ট্যাক্সি চালক সোহেল আলি ওরফে আমনের বাড়ি তিলজলায়। আরেক অভিযুক্ত শেখ আনসার আলি ওরফে নিয়াজ কড়েয়ার বাসিন্দা। বাকি দুই অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে।