ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: শহরে ফের সক্রিয় জামতাড়া গ্যাং। ব্যাঙ্কিং অ্যাপে কেওয়াইসির নামে অ্যাপ ডাউনলোডের কথা বলে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা গায়েব করার অভিযোগ উঠল। ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ।


গ্রাহকের অভিযোগ, তাঁকে ফোন করে ব্যাঙ্কিং অ্যাপের কর্মী পরিচয় দিয়ে কেওয়াইসির জন্য একটি নির্দিষ্ট অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলা হয়। পরামর্শ অনুযায়ী, অ্যাপ ডাউনলোড করে কোড নম্বর বলার পরেই গ্রাহকের বেসরকারি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে ২ লক্ষ ৮২ হাজার ৯৭০ টাকা গায়েব হয়ে যায়। জোড়াবাগান থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। তার ভিত্তিতে ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া থেকে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে লালবাজারের গোয়েন্দা শাখার পুলিশ।

গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ব্যবসায়ী প্রবীণ কুমার আগারওয়াল গত ৯ তারিখ অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ, তার ফোনে পেটি এম অ্যাপে কেওয়াইসি আপডেট করতে বলা হয়। এরপর হঠাৎই ওই ব্যবসায়ীর কাছে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন আসে। ফোনের ওপার থেকে পেটিএম অ্যাপের কর্মী বলে প্রতারক নিজেকে পরিচয় দেয়। বলে, ওই অ্যাপে যদি কেওয়াইসি আপডেট না হয় তাহলে ব্লক হয়ে যাবে অ্যাকাউন্ট । সঙ্গে সঙ্গে কথার জালে ফাঁসেন ওই ব্যবসায়ী | প্রতারক এর কথায় বিশ্বাস করেন ব্যাবসায়ী , ফোনে ডাউনলোড করেন ' কুইক সাপোর্ট অ্যাপ "। যার মাধ্যমে সহজেই প্রতারক গ্যাং অপারেট করতে পারবে ব্যবসায়ীর ফোন। বেশ কেল্লাফতে। চোখের নিমেষে প্রায় দুই লক্ষ তিরাশি হাজার টাকা গায়েব হয়ে যায় শ্যামবাজারে বেসরকারি ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে | কারণ ওই অ্যাকাউন্টের নম্বরের সঙ্গে যোগ ছিল ফোন নম্বরটি। পুলিশের কাছে গোটা বিষয়ে জানবার পরই অ্যাকাউন্টের এক লক্ষ টাকা ব্লক করে দেয় পুলিশ| এরপরই কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের ব্যাঙ্ক ফ্রড সেকশনের আধিকারিকরা তদন্তে নামে | জামতাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে পার্শবর্তী এলাকা থেকে পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দারা | ধৃতদের আদালতে পেশ করা হলে 19 ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দেয় আদালত | ধৃতদের জেরা করে জানার চেষ্টা চলছে এরকম কত জনকে তারা প্রতারণার শিকার করেছে | কোন কোন এলাকায় তারা অপারেশন চালিয়েছে |

সব মিলিয়ে বলা যায়, জামতাড়া গ্যাংয়ের আর কেউ এই ঘটনায় যুক্ত কি না তার খোঁজে তল্লাশি করছে গোয়েন্দারা । বারবার কলকাতা পুলিশের তরফে সচেতনতামূলক প্রচার চালিয়েও অনলাইন ব্যাংক প্রতারণা এখনও যে রোখা সম্ভব হয়নি তারই প্রমান এই ঘটনা । শুধু পুলিশের করা পদক্ষেপই নয়, সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে । তবেই অনলাইন ব্যাংক জালিয়াতির মতো ঘটনা রুখতে পারা যাবে।