কলকাতা: দুর্গম পথ অতিক্রম করে কেদারনাথে যাওয়া সহজ নয়। বিশেষ করে হেঁটে ওঠা তো বেশ কঠিন। কিন্তু এই কঠিন কাজটাই একেবারে সহজ করে ফেলেছেন কলকাতার ভবানীপুরের বাসিন্দা বঙ্কিম অধিকারী। একবার-দু’বার নয়, তাঁর দাবি অনুযায়ী, ৫০ বার কেদারনাথ ভ্রমণ করে ফেলেছেন! বঙ্কিমবাবু বলছেন, ‘ঈশ্বর টানছেন বলেই এতবার কেদারনাথ দর্শন করতে পারলাম। প্রভু যতদিন চাইবেন, ততদিনই কেদার যেতে পারব। তিনি যেদিন রুখে দেবেন, সেদিন আর যেতে পারব না। যদি মহাদেবের অনুমতি থাকে, তাহলে আরও অনেকবার যেতে চাই।’


ভারতবর্ষে তীর্থস্থানের সংখ্যা কম নয়। তাহলে কেদারের মহিমা কী, যা তাঁকে এতবার টেনে নিয়ে যাচ্ছে? ‘বঙ্কিমবাবু জানালেন, কেদারের মহিমা কী, সেটা স্বয়ং কেদারনাথই জানেন। আমার পক্ষে সেটা জানা বা বলা সম্ভব নয়। আমি শুধু এটুকুই বলতে পারি, এই অমোঘ আকর্ষণ বেশিদিন এড়িয়ে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব হয় না। আমি ভারতের অন্য কোনও জায়গায় যাই না, শুধু কেদারেই যাই।’


বঙ্কিমবাবু আরও জানালেন, ‘আমি ১৯৯৪ সালে প্রথমবার কেদারনাথ গিয়েছিলাম। তারপর থেকে প্রতি বছরই একাধিকবার যাই। শুধু লকডাউনের জন্য গত বছর যেতে পারিনি। সেই আক্ষেপ এ বছর পুষিয়ে নিয়েছি। এ বছর সবমিলিয়ে তিনবার কেদার গেলাম। অগাস্টে প্রথমবার গেলাম। তারপর অক্টোবরে দু’বার হল। প্রতিবারই হেঁটে উঠি।’


বঙ্কিমবাবুর মেয়ে স্বাতী জানালেন, ‘আমি আড়াই বছর বয়সে প্রথমবার কেদার গিয়েছিলাম। তখন আমার মা বেঁচেছিলেন। মা মারা যাওয়ার পরেও গিয়েছি। বড় হওয়ার পর ২০১৯ আর এবার গেলাম। মোট পাঁচবার কেদার গেলাম। কেন এতবার যাচ্ছি বলে বোঝাতে পারব না। ফিরে আসার পরেও অনেকদিন ঘোরের মধ্যে থাকি। এবারও এখনও কাজে মন বসাতে পারছি না। আমাদের বাড়ির অনেকেই বাবার সঙ্গে কেদারে যায়। বাবা অন্য কোথাও যায় না। শুধু কেদারের আশেপাশেই ঘুরে বেড়ায়। বাবার শরীর যতদিন ভাল থাকবে যাবে। বাবার সঙ্গে গিয়ে আমিও কেদারের প্রতি মোহাবিষ্ট হয়ে পড়েছি।’