কলকাতা: খুন, ধর্ষণ, হানাহানি নয়, নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসাই লক্ষ্য। বগটুই নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ করতে গিয়ে লোকসভায় এমনই মন্তব্য করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। কিন্তু তাঁর এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তৃণমূল এবং বাম-কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ, শাহের মুখে নির্বাচন, মতাদর্শের কথা ভূতের মুখে রামনামেরই সমান। তাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে গুজরাত দাঙ্গার (Gujarat Riots) প্রসঙ্গ মনে করিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
বগটুইকাণ্ডে তৃণমূলকে আক্রমণ শাহের
এক দিন আগেই দিল্লি পুরসভা সংশোধনী বিল নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি (BJP) সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলিকে একজোট হওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এ দিন লোকসভায় দিল্লি পুরসভা সংশোধনী বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হলে তৃণমূলকে পাল্টা আক্রমণ করতে দেখা যায় শাহকে। তিনি বলেন, “কে চায় না সব জায়গায় নিজেদের সরকার গড়তে? আপনারাও তো গোয়া, ত্রিপুরায় গিয়েছেন। আপনারা যান, এতে আপত্তির কী রয়েছে? আপত্তি তাঁদের হতে পারে, যাঁদের মনে ক্ষমতা হারানোর ভয় রয়েছে। আমরা নির্বাচন, মতাদর্শের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করতে চাই। কিন্তু বিরোধীদের কর্মীদের খুন করে, মা-বোনদের ধর্ষণ করে ক্ষমতায় আসতে চাই না।”
আরও পড়ুন: Govinda: দার্জিলিং সফরে বলি তারকা গোবিন্দ, কথা বললেন স্থানীয়দের সঙ্গে
শাহের এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। ফোনে এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “বাংলায় খুন, ধর্ষণ, গাজোয়ারি, বাহুবলী, অর্থবলী কার নেই! বাংলায় এই চল ২০২১-এর গোড়া থেকে শুরু হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, গুজরাত, এমনকি সম্প্রতি কেরলে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়েও কথা নেই। লক্ষ্য হচ্ছে বাংলা। ২০২১-এ এত ঘটা করে এসেছিলেন ওঁরা। মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তার পর থেকেই বাংলার আইন-শৃঙ্খলাকে অবনতির দিকে নিয়ে যাওয়া, নড়বড়ে করে দেওয়ার প্রবণতা শুরু হয়েছে।”
গুজরাত দাঙ্গার কথা শাহকে স্মরণ করালেন বিরোধীরা
সিপিএম-এর (CPM) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর (Sujan Chakraborty) কথায়, “অমিত শাহ যা বলেছেন, তা অত্যন্ত হাস্যকর। ভূতের মুখে রামনাম আর কী! গুজরাতে কী ভাবে মানুষ খুন করেছেন, জ্যান্ত পুড়িয়ে মেরেছেন মানুষকে, তা সবাই জানেন।”
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury) বলেন, “বাংলায় যা হয়েছে, তা স্বীকার করতেই হবে। কিন্তু যে বিজেপি এ কথা বলছে, তারা কি সাধু? অত কথআর কী আছে, বাংলায় ৩৫৫, ৩৫৬ ধারা জারি করে দেখান না! কে বাধা দিয়েছে! তা না করে, খামোকা বাজার গরম করার কী দরকার!”
উল্লেখ্য, রামপুরহাটের (Rampurhat Fire) বগটুইকাণ্ডে (Bogtui Arson) বুধবারই বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতিকে আজ রিপোর্ট জমা দেয় দলের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। সেখানে ঘটনার সঙ্গে বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রতর যোগ থাকার অভিযোগ তোলা হয়। রিপোর্টে দাবি করা হয় যে, সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকা ও স্বাধীনতার মৌলিক অধিকার রক্ষায় ব্যর্থ তৃণমূল সরকার। বালি, পাথর, কয়লা এবং অন্যান্য মাফিয়ার টাকা তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতাদের কাছে যায়।