ময়ুখ ঠাকুর চক্রবর্তী ও সুদীপ্ত আচার্য, কলকাতা: রবিনসন স্ট্রিটকাণ্ডের ছায়া এবার বাগবাজারে। বৃদ্ধের পচাগলা দেহ আগলে বসেছিলেন স্ত্রী ও মেয়ে। মৃতের নাম দ্বিগ্বিজয় বসু। স্থানীয় সূত্রে খবর, মেয়ে ও স্ত্রীকে বাগবাজারের বাড়িতে থাকতেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ। বেশ কিছুদিন তাঁকে দেখতে পাননি প্রতিবেশীরা। গতকাল রাতে দুর্গন্ধ পেয়ে শ্যামপুকুর থানায় খবর দেন তাঁরা।পরে পুলিশ গিয়ে বৃদ্ধের পচাগলা দেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, অসুস্থতার কারণে কয়েকদিন আগেই মৃত্যু হয়েছে বৃদ্ধের। মৃতের স্ত্রী ও মেয়েকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।


‘উনি জীবিত। ওঁকে তুলবেন না।’ পাড়ার লোকের কাছ থেকে দুর্গন্ধ বেরনোর খবর পেয়ে পুলিশ এসে যখন এই বাড়িতে ঢোকে, তখন পুলিশ অফিসারকে এ কথাই বলেছিলেন বৃদ্ধের স্ত্রী। এরপর এই বাড়ি থেকেই পুলিশ উদ্ধার করে ৭৫ বছরের দিগ্বিজয় বসুর পচাগলা মৃতদেহ। যে দেহ কয়েকদিন ধরে আগলে বসেছিলেন তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে।


পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃদ্ধের স্ত্রী বিশ্বাস করতে চাইছিলেন না, তাঁর স্বামী মারা গেছেন। ঠিক যেন রবিনসন স্ট্রিটকাণ্ডের ছায়া।


পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে প্রতিবেশীরা বাগবাজার স্ট্রিট ঘাটের এই বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে পুরসভার স্থানীয় ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটরকে জানান। তিনিই খবর দেন শ্যামপুকুর থানায়। প্রতিবেশীদের বক্তব্য, পুলিশ ঘরে ঢুকে দেখে বিছানায় শোয়ানো বৃদ্ধের মৃতদেহ। তাতে পচন ধরে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে। আর সেই ঘরেই রয়েছেন বৃদ্ধের স্ত্রী ও মেয়ে। পুলিশ দেহ তুলতে গেলে বৃদ্ধের স্ত্রী বলেন, তাঁর স্বামী জীবিত। এরপর স্ত্রীকে বুঝিয়ে রাত ১টা নাগাদ পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ পাঠায় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।


স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃদ্ধের মেয়ে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। স্ত্রী, মেয়েকে নিয়েই ছিল বৃদ্ধের সংসার। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, বেশ কয়েকদিন আগে মৃত্যু হয় বৃদ্ধের। সম্ভবত বয়সজনিত অসুস্থতার কারণেই মারা যান তিনি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। বৃদ্ধের স্ত্রী ও মেয়েকে চিকিত্‍সার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।