তুহিন অধিকারী, বাঁকুড়া: বসবাসের জন্য রয়েছে দোতলা বাড়ি। তবু নাম ছিল আবাস তালিকায়। সমীক্ষা শুরু হতেই বাড়ি ফেরানোর আর্জি তৃণমূল নেতার।  জনরোষের ভয়েই এমন কাণ্ড', কটাক্ষ বিজেপির।


 এক ভাই তৃণমূলের অঞ্চল সহ সভাপতি। অপর ভাই দলেরই অঞ্চলের কোর কমিটির সদস্য। দুই ভাইয়ের একত্রে বসবাসের জন্য রয়েছে দোতলা বাড়ি। কিন্তু তারপরেও আবাস তালিকায় নাম ছিল। সমীক্ষা শুরু হতেই অবশ্য স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে আবাসের বাড়ি না নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন স্থানীয় বিডিও অফিসে। বাঁকুড়ার পাত্রসায়ের ব্লকের বালসী ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পানপুকুর মাঝি পাড়ার এমন ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। তৃণমূল এই ঘটনাকে সততা বলে প্রশংসা করলেও বিজেপির কটাক্ষ,' জনরোষে পড়ার ভয়েই এমন কাণ্ড।' 


আবাস প্রকল্পের তালিকা নিয়ে এই প্রথম নয়, বহু ক্ষেত্রে দেখা গেছে পাকা বাড়ি থাকার পরেও শুধুমাত্র শাসক দলের নেতা বা ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে নাম উঠেছে আবাস তালিকায়। বহু ক্ষেত্রে ঘটেছে উল্টো ঘটনাও। শুধুমাত্র শাসক দলের ঘনিষ্ঠ না হওয়ায় বসবাসযোগ্য বাড়ি না থাকলেও তালিকায় ঠাঁই হয়নি হতদরিদ্র পরিবারের। এবার বাঁকুড়ার পাত্রসায়ের ব্লকের বালসী ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রেও দেখা গেল সেই একই ছবি।জানা গিয়েছে, পাত্রসায়ের বালসী ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পানপুকুর মাঝি পাড়া গ্রামে নিজেদের পাকা দোতলা বাড়ি রয়েছে তৃণমূলের স্থানীয় অঞ্চল সহ সভাপতি নিমাই মাঝি ও তৃনমূলের অঞ্চল কোর কমিটির সদস্য আনন্দ মাঝির।


সম্প্রতি জেলা জুড়ে আবাস যোজনার সমীক্ষার কাজ শুরু হলে দেখা যায় নিজেদের পাকা দোতলা বাড়ি থাকা সত্বেও আবাসের উপভোক্তা তালিকায় নাম রয়েছে। বিষয়টি জানার পরেই সমীক্ষক দলকে ওই প্রকল্পের উপভোক্তা তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার কথা বলেন তারা। ওই প্রকল্পের উপভোক্তা তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার জন্য পাত্রসায়ের বিডিও অফিসে লিখিতভাবে আবেদনও জানান। তাঁদের দাবি, বছর পাঁচেক আগে যখন আবাসের সমীক্ষা হয়েছিল তখন তাঁদের পাকা বাড়ি ছিল না। পরবর্তীতে তাঁরা পাকা বাড়িটি তৈরী করেছেন। এখন নিজেদের পাকা বাড়ি থাকায় আবাস প্রকল্পের বাড়ি তাঁরা ফিরিয়ে দিচ্ছেন।


আরও পড়ুন, 'পরমাণু বোমা তৈরিতে ব্যবহার হয়..'! TMC কর্মাধ্যক্ষের স্বামীর কাছে কীভাবে এল ভয়ঙ্কর তেজস্ক্রিয় পদার্থ ‘ক্যালিফোর্নিয়াম’ ?


তৃনমূল নেতৃত্বের দাবি, 'অপর একটি দরিদ্র পরিবার যাতে ওই বাড়ি পেতে পারে সেই জন্যই ওই দুই তৃণমূল নেতা বাড়ি ফিরিয়ে দিয়েছেন। এই ঘটনা সততার নজির হয়ে থাকবে।' যদিও এনিয়ে বিজেপি কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, 'পাঁচ বছর আগে যে পরিবার কাঁচা বাড়িতে বসবাস করতো পাঁচ বছরের মাথায় তিনি কোন জাদুবলে দোতলা বাড়ি তৈরি করতে পারেন, তার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। একই সাথে বিজেপির কটাক্ষ এখন জনরোষে পড়ার ভয়েই আবাস বাড়ি ফেরানোর আবেদন জানাতে বাধ্য হচ্ছেন তৃণমূলের ওই দুই ভাই।'


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।