কলকাতা:  সাহিত্যপ্রেমী বাঙালির মনে চিন্তার ভাঁজ। ফুসফুস ও শ্বাসনালীর সংক্রমণের জেরে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে বর্ষীয়ান সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারকে। বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে এই মুহূর্তে চিকিৎসাধীন তিনি। সমরেশ মজুমদারের চিকিৎসায় তিন চিকিৎসকের একটি মেডিক্যাল বোর্ডও গঠন করা হয়েছে। 


জানা গিয়েছে,আজ সকাল থেকেই নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হচ্ছিল তাঁর। ফলে এই পরিস্থিতিতে পরিবারের তরফে কোনওরকম ঝুঁকি না নিয়েই হাসপাতালে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শ্বাসনালীতে গভীর সংক্রমণ রয়েছে বর্ষীয়ান সাহিত্যিকের। তার জেরেই শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। সাহিত্যিকের চেস্ট এক্সরে, সিটি স্ক্যান-সহ একাধিক রক্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে। পাশাপাশি তাঁর কোভিড পরীক্ষার জন্য রিপোর্টও পাঠানো হয়। ইতিমধ্যে পাওয়া খবর অনুযায়ী তাঁর কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।  


করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এই মুহূর্তে ত্রস্ত বাংলা সহ গোটা দেশ। তার মাঝে আবার বিভিন্ন ফাঙ্গাল ইনফেকশনের অতিমারির মাথাচাড়া দিয়েছে। তাই ৭৯ বছরের সাহিত্যিকের অসুস্থ হওয়ার খবরে যথেষ্ট চিন্তিত বিভিন্ন মহল। তাঁর একাধিক গুণমুগ্ধ থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই সমরেশ মজুমদারের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছেন।


এমনিতেই করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় বঙ্গ সাহিত্যজগতে অনেক অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। শঙ্খ ঘোষ থেকে অদ্রীশ বর্ধন একাধিক লেখক, সাহিত্যিককে কেড়ে নিয়েছে মারণ ভাইরাসের কামড়। 


 ১৯৪৪ সালের ১০ মার্চ চা বাগান ঘেরা ডুয়ার্সে জন্ম সমরেশ মজুমদারের। জলপাইগুড়ির এই সাহিত্যিকের স্কুলজীবন জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলে। কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে তারপর বাংলায় স্নাতক ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাশ। ১৯৬৭ সালে দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত 'দৌড়'-এর পরে কালবেলা, উত্তরাধিকার, কালপুরুষ, বুনো হাঁসের মতো একাধিক উল্লেখযোগ্য উপন্যাস লিখেছেন তিনি। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে অগুন্তি সম্মান।


১৯৮২ সালে আনন্দ পুরস্কার পান তিনি। ১৯৮৪ সালে সাহিত্য আকাদেমী পুরস্কার, বঙ্কিম পুরস্কার এবং আইআইএমএস পুরস্কার পান সমরেশ মজুমদার। চিত্রনাট্য লেখক হিসাবেও জয় করেছেন বিএফজেএ, দিশারী এবং চলচ্চিত্র প্রসার সমিতির অ্যাওয়ার্ডর পালকও রয়েছে তাঁর মুকুটে।