সমীরণ পাল, দীপক ঘোষ, সুজিত মণ্ডল, কলকাতা: নতুন রাজ্য কমিটিতে মতুয়াদের প্রতিনিধি না থাকার অভিযোগ। দলের হোয়াটসঅ্যাপ (Whatsapp) গ্রুপ ছাড়লেন পাঁচ বিজেপি বিধায়ক। পদ না পেলে অনেকের মন খারাপ হয়। সাফাই দিলেন সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Mzumdar)। বিজেপির শেষের শুরু, খোঁচা দিয়েছেন সৌগত রায় (Sougata Roy)।


পুরভোটের (Municipality) আগে রাজ্য বিজেপিতে অস্বস্তি! দলের বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন ৫ বিজেপি বিধায়ক (BJP MLA)। সূত্রের দাবি, নতুন রাজ্য কমিটিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের কোনও প্রতিনিধি নেই। এই কারণেই দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছেন ৫ জন বিধায়ক।


নতুন রাজ্য কমিটি থেকে বাদ পড়ায়, আগেই বিজেপির (BJP) মিডিয়া সেলের হোয়াটসঅ্যাপ (Whatsapp) গ্রুপ থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন সায়ন্তন বসু (Sayanta Bose)। এবার সেই পথেই হাঁটলেন পাঁচ বিধায়ক। দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে সরে গেলেন, গাইঘাটার বিধায়ক ও মতুয়া ঠাকুরবাড়ির সদস্য সুব্রত ঠাকুর। বনগাঁ উত্তরের অশোক কীর্তনীয়া। কল্যাণীর অম্বিকা রায়, রানাঘাট দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী এবং হরিণঘাটার অসীম সরকার। 


বনগাঁ (Bongaon) উত্তরের বিজেপি (BJP) বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া জানিয়েছেন, আমি এই বিষয়ে কোনও বক্তব্য রাখতে পারব না। কেন বেরলাম সেটা আমি এখন বলতে পারব না


রানাঘাট দক্ষিণের বিজেপি (BJP) বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারীর কথায়, আমার ব্যক্তিগত কোনও কারণ নেই। এটা ২৫-৩০ শতাংশ মানুষের কারণ। অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্গের সিদ্ধান্ত যে, ভারতীয় জনতা পার্টির ৬০ শতাংশ ভোট মতুয়া সঙ্ঘের। ৭৭টা আসনের মেজরিটি মতুয়াদের প্রভাব ছিল। ১৮টি সিটের ১৫-টিতে মতুয়াদের প্রত্যক্ষ প্রভাব ছিল। ভোট পরবর্তী যে কমিটি হয়েছে, সেই কমিটিতে মতুয়া কমিটি, সাধারণ মানুষ খুশি নন। অল ইন্ডিয়া মতুয়া সঙ্ঘের ক্ষোভ প্রকাশ বলতে পারেন।


একের পর এক বিজেপি বিধায়ক ও নেতারা দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে থাকায়, স্বাভাবিকভাবেই কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সৌগত রায়ের (Sougata Roy) কথায়, বিজেপি ছোট বেলুন, পাম্প করে ফোলানো হয়েছে, ভোটে খারাপ ফলে বেলুনটা অনেক ছোট, কলকাতা পুরভোটের পর একেবারেই ছোট হয়ে গেছে। এখন বিজেপিতে মুষলপর্ব চলছে। নানা কারণ দেখিয়ে লোক বিজেপির সম্পর্ক ছাড়ছে। এরা আগে সায়ন্তন বসু ছেড়েছেন। বনগাঁর (Bongaon) বিধায়ক ছেড়েছেন, আরও ছাড়বেন।


বিজেপির রাজ্য  সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কথায়, রাজ্য বিজেপির সভাপতি,  সবার কিছু একটা আকাঙ্খা থাকে। নতুন কমিটি হলে সেই পদে না থাকলে, মন খারাপ হয়।


২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে মতুয়া অধ্যুষিত বনগাঁ ও রানাঘাট, দুটি আসনই দখল করেছে বিজেপি। গত বিধানসভা নির্বাচনে, টার্গেট ২০০ সফল না হলেও, মতুয়া অধ্যুষিত গাইঘাটা, বনগাঁ উত্তর, কল্যাণী, রানাঘাট দক্ষিণ, হরিণঘাটা, বাগদায় মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক ধরে রেখে জয় আসে বিজেপির। 


ইতিমধ্যেই বাগদার বিধায়ক বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে এসেছেন। আর বিধানসভা ভোটের (Assembly Election) ৮ মাসের মধ্যেই দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন ৫ বিধানসভার বিধায়করা। ৫ বিজেপি বিধায়কের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ।


দলবদলের জল্পনা উস্কে দিল তৃণমূল।বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান শঙ্কর দত্তের কথায়, এরকমভাবে আরও অনেকে চলে আসবেন


বিধানসভার (Assembly) বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গার কথায়, অম্বিকা রায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে, এটা ভুল বসত হয়েছে, দলের সঙ্গেই আছি, দলের সঙ্গেই থাকতে চাই। বাকি চারজনের সঙ্গে কথা বলব, কথা হয়নি। 


এদিকে বিজেপি (BJP) বিধায়কদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়ার পরই, বনগাঁয় বিজেপির পার্টি অফিসে ঢিল ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। ছিঁড়ে যায় ফ্লেক্স।