কলকাতা: ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে ফের কলকাতায় মৃত্যু হল এক রোগীর। হরিদেবপুরের বাসিন্দা ৩২ বছরের ওই মহিলা করোনা আক্রান্ত হওয়ায় ভর্তি ছিলেন শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, করোনার পাশাপাশি, তিনি মিউকরমাইকোসিসেও আক্রান্ত হন। চিকিৎসার জন্য তাঁকে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের ওষুধ অ্যাম্ফোটিরিসিন-বি দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার ভোরে মৃত্যু হয় ওই রোগীর।
এনিয়ে করোনা ও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়ে দ্বিতীয় মৃত্যুর ঘটনা ঘটল কলকাতায়। এর আগে মৃত্যু হয় শহরতলির এক বাসিন্দার। পঞ্চাশোর্ধ্ব এক মহিলা করোনামুক্ত হওয়ার পর তিনি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হন।
করোনা-মহামারীর ঝাপটায় গোটা দেশ যখন ছারখার হয়ে যাচ্ছে, তখন ভয়াবহ এই অসুখকেও মহামারী ঘোষণা করেছে কেন্দ্র।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারি ঘোষণার জন্য প্রত্যেক রাজ্যকে চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সেখানে বলা হয়েছে, এই রোগকে ‘মহামারি আইন’-এর তালিকাভুক্ত করা হোক। রাজ্যগুলিকে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রককে জানাতে হবে।
ঠিক যেমনটা হচ্ছে এখন করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে। মহামারি সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে রাজ্যগুলিকে চিঠি পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লভ আগরওয়াল।
চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিসের সনাক্তকরণ, নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত নির্দেশিকা সমস্ত সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজগুলিকে মেনে চলতে হবে।
বৃহস্পতিবার করোনা নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠকের পর ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিস নিয়েও মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকোরমাইকোসিস এক ধরনের ফাঙ্গাল সংক্রমণ। যাঁদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস রয়েছে, এইচআইভি বা ক্যানসারের মতো রোগে আক্রান্ত, নিয়মিত স্টেরয়েড নেন বা হাসপাতালে চিকিত্সাধীন থাকার কারণে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়েছে -- তাঁরা মিউকোরমাইকোসিসে আক্রান্ত হতে পারেন।
করোনা আক্রান্ত রোগীদের মধ্যেও এই রোগের প্রাদুর্ভাব হচ্ছে। চিকিৎসক অংশুমান মুখোপাধ্যায় বলেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস কী, কীভাবে এল। কীভাবে এফেক্ট করে। ব্লাড ভেসেলের ভিতরে একটা জায়গা কালো হয়ে যায়। ডায়াবিটিক পেশেন্ট, ইনিউনিটি কম, তাদের থ্রেট। করোনায় ইমিউনিটি কমে যায়। ব্ল্যাক ফাঙ্গাস হওয়ার চান্স থাকে।
চোখের সমস্যা, স্নায়ুর সমস্যা, কোভিড সেরে যাওয়ার পরেও কাশি না কমা, শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা দেখা দিচ্ছে মিউকোরমাইকোসিসে আক্রান্তদের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময় মতো চিকিত্সা না করলে, দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়, স্নায়ু প্রভাবিত বা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।