কলকাতা: নার্সিং হোমে এক সপ্তাহ থাকার পর বাড়ি ফিরলেন সস্ত্রীক বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। উডল্যান্ডস হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সিআইটি রোডের মেরিল্যান্ড নার্সিংহোমে ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। 


সূত্রের খবর, তাঁর অ্যান্টিবডি রিপোর্ট স্বাভাবিক। করোনা গাইডলাইন মেনে ২১ দিন কেটে গিয়েছে। আপাতত সুস্থ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ফলে তাঁকে বাড়ি ফেরার অনুমতি দেন চিকিৎসকরা। তবে বাড়িতে ফিরলেও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে চিকিৎসকের নজরদারিতে থাকতে হবে।  


গত বুধবার উডল্যান্ডস হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর স্ত্রী। তবে, বাড়ি ফেরেননি। এক সপ্তাহ ধরে ছিলেন মেরিল্যান্ড নার্সিং হোমে। সেখানে তাঁর সঙ্গে ভর্তি ছিলেন স্ত্রী ও কন্যাও। 


গত ১৮ মে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কোভিড পজিটিভ হন। বাড়িতেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু, আচমকা শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দক্ষিণ কলকাতার উডল্যান্ডস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 


জানা যায়, ২৪ তারিখ রাত থেকে তাঁর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। বেড়ে যায় শ্বাসকষ্ট। ২৫ তারিখ  সকালে অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৮০-৮২ হয়ে যায়।  এরপরই তাঁকে জরুরি ভিত্তিতে উডল্যান্ডস্ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 


এদিকে, ২৪ তারিখ বাড়ি ফেরার খানিকক্ষণের মধ্যে ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন মীরা ভট্টাচার্যও। তাঁকে ফের উডল্যান্ডস-এই ভর্তি করা হয়। 


সূত্রের খবর, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল।  প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর চিকিত্‍সায় গঠিত হয় ৮ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড।  বাইপ্যাপ সাপোর্টে রাখা হয় তাঁকে।  


হাসপাতালর তরফে বুধবার জানানো হয়েছিল, দুটি রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট খতিয়ে দেখে সেই রাত থেকেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে রেমডেসিভির দেওয়া শুরু হয়। 


পাশাপাশি, প্রয়োজন হলে টকিলিজুমাব দেওয়ার পরিকল্পনাও ছিল চিকিৎসকদের। কিন্তু, রেমডেসিভিরে কাজ হওয়ায় শেষ পর্যন্ত টকিলিজুমাব দেওয়ার প্রয়োজন হয়নি। 


চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, চিকিৎসায় সাড়া দেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হতে শুরু করে। চিকিত্‍সকদের সঙ্গে কথা বলেন। নিজের হাতে স্বাভাবিক খাবার খেতে শুরু করেন। 


হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছিল, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য যথেষ্ট সজাগ রয়েছেন। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথাবার্তাও বলছেন। খোঁজ নিচ্ছেন পারিপার্শ্বিক ঘটনাক্রম সম্পর্কে।


বাইপ্যাপ দিয়ে শরীরে ধীরে ধীরে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখা হয়। এছাড়া, স্যালাইনের মাধ্যমে অ্যান্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েড দেওয়া হয়।


এরপর গত ২ জুন উডল্যান্ডস থেকে ছাড়া পান বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ছাড়া পান স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্যও। জানা যায়, তাঁদের কন্যাও অসুস্থ। ফলে, চিকিৎসার সুবিধার জন্য তিনজনই ভর্তি হন মেরিল্যান্ড নার্সিংহোমে।