সন্দীপ সরকার, কলকাতা : ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে করোনার তৃতীয় ঢেউ অনিবার্য ও অবশ্যম্ভাবী। আর তেমনটা হলে তৃতীয় ঢেউয়ে শিশু ও কিশোররা অত্যাধিক সংখ্যায় করোনা আক্রান্ত হতে পারে কি না, এই প্রশ্ন উদ্বেগ আরও বাড়াচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটেই দেশজুড়ে ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের মধ্যে ভারত বায়োটেক এবং জাইডাস ক্যাডিলা, দুই ভারতীয় সংস্থার তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে জোরকদমে। এরমধ্যে পার্ক সার্কাসের ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে চলা জাইডাস ক্যাডিলার করোনা ভ্যাকসিন জাইকোভ ডি-র ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। ICH-এর বক্তব্য তাদের এখানে ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের মধ্যে যে ট্রায়াল হয়েছে, তার মধ্যে ৫৩ শতাংশের শরীরেই মিলেছে করোনার অ্যান্টিবডি!
দেশে ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী, প্রায় দেড় হাজার জনের ওপর জাইডাস ক্যাডিলার তৈরি জাইকভ ডি-র তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। এ রাজ্যে সেই ট্রায়াল চলছে পার্ক সার্কাসের ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে। সূত্রের খবর, প্রথমে ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী ৮৫ জন এই ট্রায়ালে অংশ নেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করে। সংস্থার তরফে শর্ত ছিল, পরিবারের কোনও সদস্য আগে করোনা আক্রান্ত হলে বা ট্রায়ালে ইচ্ছুক করোনা আক্রান্ত হলে বা শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি থাকলে ট্রায়ালে অংশ নেওয়া যাবে না। সেইমতো ৮৫ জনেরই RTPCR এবং অ্যান্টিবডি টেস্ট করানো হয়।
আর সেখানেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। চিকিত্সকদের দাবি, ৮৫ জনের মধ্যে ৪৫ জনের শরীরেই করোনার অ্যান্টিবডি মিলেছে। অর্থাত্ ট্রায়ালে অংশ নিতে ইচ্ছুক ৫৩ শতাংশ আগেই নিজেদের অজান্তে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু, প্রাকৃতিকভাবে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন চিকিত্সকরা? পার্ক সার্কাসের ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের চিকিৎসক প্রভাসপ্রসূন গিরি বলেছেন, 'তৃতীয় ওয়েভে মনে করছিল বাচ্চাদের ওপরে পড়বে। বাচ্চারা নিজেদের অজান্তের সংক্রমিত হয়ে গিয়েছে, এটা আমাদের কিছুটা উত্সাহিত করবে। কারণ তাদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কাটা কমল।' অপর চিকিৎসক জয়দীপ চৌধুরী বলেছেন, 'এই অ্যান্টিবডি সাময়িক সংক্রমণের আশঙ্কা কমছে। কিন্তু এই অ্যান্টিবডি আশু সংক্রমণের ভয় নেই। তবে এটা ফুলপ্রুফ অ্যান্টিবডি নয়। সেটাও মাথায় রাখতে হবে।'
গবেষণার ফলাফল যাই হোক, ১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্য কবে করোনার ভ্যাকসিন আসবে, সেদিকেই তাকিয়ে অনেকে।