কলকাতা:  নিউ নর্মালে স্কুল খোলার পরই বিপত্তি! করোনা আক্রান্ত এক শিক্ষক। আরও ২ শিক্ষক জ্বরে আক্রান্ত। ফের বন্ধ হয়ে গেল কসবা চিত্তরঞ্জন হাই স্কুল। 


স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, এক শিক্ষকের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ হওয়ায় এবং আরও দু’জন শিক্ষকের জ্বর আসার কারণে বিশেষ সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। 


আগামীকাল, সম্পূর্ণ স্কুলবাড়ি স্যানিটাইজ করা হবে। পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি না দেওয়া পর্যন্ত বৃহস্পতিবার থেকে স্কুল বন্ধ থাকবে। 


আর এই প্রেক্ষিতেই সকলের মনে একটা প্রশ্ন জাগছে। তা হল-- এবার কি বাংলায় আছড়ে পড়তে পারে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ?


এদিকে, দেশে সংক্রমণ নিম্নমুখী হলেও মহারাষ্ট্র, কেরল নিয়ে যাচ্ছে না মাথাব্যথা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান,  গত ২৪ ঘণ্টায় মহারাষ্ট্রে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ২১০ জন। কেরলে ২ হাজার ২১২ জন। 


একদিনে দেশে মোট আক্রান্তের সত্তর শতাংশই আক্রান্ত হয়েছেন ওই দুই রাজ্যে।  কর্ণাটক, তামিলনাড়ুর মতো দক্ষিণের রাজ্যগুলিতেও নতুন করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। 


এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি দেশে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ উঠছে? এই রাজ্যগুলির সঙ্গে রেল, সড়ক ও আকাশপথে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে বাংলার। বাংলায় সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমতে থাকলেও, করোনার সেকেন্ড ওয়েভ নিয়ে চিন্তিত চিকিৎসকদের একাংশ।


তাঁদের মতে, মহারাষ্ট্র সহ বেশ কিছু জায়গায় কোভিডের সংক্রমণ বাড়ছে, দক্ষিণ ভারতেও ছড়াচ্ছে, আমাদের এখানেও সংক্রমণ বাড়তে পারে, ইউকে এবং অন্যান্য স্ট্রেন ঘুরে ফিরে আসছে, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ায় বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক ব্যবহারে কড়া হতে হবে। 


হায়দরাবাদের সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি গবেষণা করেছে করোনার ৫ হাজার নতুন প্রজাতি নিয়ে। গবেষকদের মতে, করোনার এন৪৪০কে প্রজাতি দক্ষিণ ভারতে ছড়িয়েছে। 


গবেষকরা জানিয়েছেন, আগের থেকে বেশি গতিতে ছড়াচ্ছে নতুন এই স্ট্রেন। এই প্রেক্ষিতে টিকাকরণের গতি বাড়ানোর কথা বলছেন চিকিৎসকরা। তাঁদের মতে, চারদিকের তথ্য দেখে মনে হচ্ছে দ্বিতীয় ওয়েভ আসছে, কতটা ভয়াবহ হবে তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না, ভ্যাকসিনেশনের গতি আরও বাড়ানো হোক, স্কটল্যান্ডের রিসার্চে দেখা গেছে, টিকাকরণের গতি বাড়ানোয় ভর্তি হওয়ার পরিমান কমেছে।


আর কয়েক দিনের মধ্যেই ঘোষণা হতে পারে বিধানসভা ভোটের দিনক্ষণ। ভোটের অনেক আগে থেকেই রাজ্য চলছে মিছিল, মিটিং, রাজনৈতিক সমাবেশ। চিকিৎসকদের একাংশের মতে, রাজনৈতিক কর্মসূচিতে রাশ না টানলে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে।


চিকিৎসকদের মতে, যেভাবে রাজনৈতিক দলগুলির প্রচার চালাচ্ছে তা চিন্তার, সচেতন হতে হবে তা নাহলে পরিস্থিতি আবার আগের মতো হতে পারে।


স্বাস্থ্য দফতরের সোমবারের মেডিক্যাল বুলেটিন অনুযায়ী রাজ্যে এখন সক্রিয় রোগীর সংখ্যা  ৩ হাজার ৪৪০।