কলকাতা:  করোনাকালে ফের শহরে অমানবিকতার ছবি। ৬ ঘণ্টা ধরে ফ্ল্যাটেই পড়ে থাকল করোনা রোগীর মৃতদেহ। গড়িয়াহাট থানা এলাকার ১৯ নম্বর ফার্ন রোডের ঘটনা। 


স্থানীয় সূত্রে খবর, দিনকয়েক আগে করোনা আক্রান্ত হন ৪৯ বছরের সন্ধ্যা মাহাতো। ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন তিনি। স্থানীয়দের দাবি, গতকাল দুপুর থেকে সাড়া না পেয়ে খবর দেওয়া হয় গড়িয়াহাট থানায়। 


বেশ কয়েকঘণ্টা পর পুলিশ আসে। এরপর প্রায় ৬ ঘণ্টা পর রাতে দরজা ভেঙে উদ্ধার হয় ওই করোনা রোগীর দেহ। দীর্ঘক্ষণ ধরে দেহ পড়ে থাকায় সংক্রমণের আশঙ্কায় বাড়ছে উদ্বেগ। 


গতকালই বাগুইআটি অঞ্চলের রঘুনাথপুরে বাড়ি থেকে ১৫ ঘণ্টা পর উদ্ধার করোনা রোগীর মৃতদেহ। দেহ উদ্ধারের আগেই এদিন এলাকা স্যানিটাইজ করার কাজ শুরু করে বিধাননগর পুরসভা। এই ঘটনায় প্রশাসনিক সমন্বয়ের অভাব স্পষ্ট বলে দাবি স্থানীয়দের।
 
পরিবার সূত্রে খবর, গতকাল অবসরপ্রাপ্ত রেল কর্মী অসিত দে-র করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। অভিযোগ, তারপর থেকে বেশ কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরেও মেলেনি বেড। 


পরিবারের দাবি, শেষপর্যন্ত রাত ১০টা নাগাদ অ্যাম্বুল্যান্সেই মৃত্যু হয় ওই করোনা রোগীর। মৃতের স্ত্রীও করোনা আক্রান্ত। গতকাল রাত থেকে মৃত স্বামীকে নিয়ে একাই রয়েছেন তিনি। 


বারবার প্রশাসনকে জানিয়েও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এতক্ষণ ধরে করোনা রোগীর দেহ পড়ে থাকায় সংক্রমণের আশঙ্কায় বেড়েছে উদ্বেগ। 


শুধু বাগুইআটি নয়। এর আগে, একাধিক জায়গায় উঠে এসেছে এই চিত্র। তিলজলা থেকে সোনারপুর, গড়ফা থেকে লেকটাউন-- সর্বত্র উঠে এসেছে এই অমানবিকতার ছবি।


দেশের পাশাপাশি রাজ্যেও থাবা বসিয়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। পরিস্থিতিতে লাগাম টানতে কাল সন্ধে থেকে আংশিক লকডাউন জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। 


অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে শপিং মল, সিনেমা হল, রেস্তোরাঁ, বার, বিউটি পার্লার, স্পা, জিম, স্পোর্টস কমপ্লেক্স ও সুইমিং পুল। সকাল-বিকেল মিলিয়ে মাত্র ৫ ঘণ্টা খোলা থাকবে দোকান, বাজার। 


শুধুমাত্র ওষুধের দোকান ও মুদিখানাকে ছাড়ের আওতায় রাখা হয়েছে। চালু থাকবে হোম ডেলিভারি। কেনাকাটা করা যাবে অনলাইনে। 


পাশাপাশি, সমস্ত রকম সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা সংক্রান্ত অথবা বিনোদনমূলক জমায়েতের উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাজ্য সরকার।