কলকাতা: করোনা আবহে বেড সঙ্কট মেটাতে এবার কোভিড হাসপাতাল গড়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুরসভা। জানানো হয়েছে, মুক্তারাম বাবু স্ট্রিটে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগের একটি ভবন রয়েছে। সেখানেই তৈরি হবে ৭৫ বেডের কোভিড হাসপাতাল। 


এ দিন ওই ভবন পরিদর্শন করেন কাশীপুর-বেলগাছিয়ার তৃণমূল বিধায়ক ও পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ। এই ভবনে হাসপাতাল গড়ে তোলার মতো পরিকাঠামো রয়েছে বলেই তিনি জানিয়েছেন।


পরবর্তীতে চিকিত্সা পরিষেবার জন্য সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা চাওয়া হবে। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল ও আরজি কর হাসপাতালের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক।


রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি ভাল নয়। প্রতিদিনই রেকর্ড হারে বাড়ছে দৈনিক সংক্রমণ। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের বুধবারের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে আক্রান্ত ২০ হাজার ৩৭৭ জন। পাশাপাশি মৃতের সংখ্যা ১৩৫। গত একদিনে নতুন করে ১ হাজার ১১ জন বেড়ে এই মুহূর্তে রাজ্যে অ্যাকটিভ করোনা রোগীর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ২৮ হাজার ৬৮৪ জনে দাঁড়িয়েছে। 


তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে এপ্রিলের শেষেই রাজ্যের বেসরকারি হাসপাতালের ১,৩৬৭ বেড করোনা চিকিত্সার জন্য নিয়ে অধিগ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। ২৮ এপ্রিল একটি নির্দেশিকা জারি করে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের তরফে।


অন্যদিকে বেড-সঙ্কট মেটাতে সল্টলেক স্টেডিয়ামে তৈরি হল ২২৩ শয্যার কোভিড হাসপাতাল।  কিশোরভারতীর পর সল্টলেক আমরি হাসপাতালের সহায়তায় সল্টলেক স্টেডিয়ামে তৈরি হয়েছে ২২৩ বেডের হাসপাতাল। এর মধ্যে ২১০টা জেনারেল বেডও রয়েছে। 


সম্প্রতি রাজ্য সরকারের তরফে, বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিকে মোট বেডের ৬০ শতাংশ কোভিড রোগীদের জন্য বরাদ্দ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি, বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে কোভিড বেডের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে স্থানীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুমতিও দেওয়া হয়। অর্থাৎ, আর স্বাস্থ্য ভবনের মুখাপেক্ষী হতে হবে না।


রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর জানিয়ে দেয়, বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপ্যাল এবং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকরাই কোভিড বেড বাড়ানোর ব্যাপারে এবার থেকে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।


শুধু তাই নয়, উত্তর কলকাতার বাসিন্দাদের জন্য সেফ হোম তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে কলকাতা পুরসভা। করোনা মোকাবিলায় পাইকপাড়ার হরেকৃষ্ণ শেঠ লেনে মহিলাদের হস্টেলে ৭৫ বেডের সেফ হোম তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কলকাতা পুরসভার তরফে। 


বলার অপেক্ষা রাখে না, এই পরিস্থিতিতে বাড়ছে বেড অক্সিজেনের চাহিদা। এনিয়ে মোদিকে দফায় দফায় চিঠি লেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বেড এবং অক্সিজেনের চাহিদা নিশ্চিত করতে তৎপর প্রশাসন।