কলকাতা : পুজোর দিনগুলোয় ভিড় উপচে পড়েছিল কলকাতার রাস্তায়। বেপরোয়া জনস্রোতের ধাক্কায় ধুয়ে মুছে গিয়েছিল করোনা-বিধি। আর পুজো মিটতেই কলকাতায় বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতে ফের শুরু হল কড়াকড়ি।
সংক্রমণ রোধে একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, রাত সাড়ে ১০টার পরে খোলা রাখা যাবে না রেস্তোরাঁ-পানশালা। রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত রাত্রিকালীন বিধিনিষেধ জারি থাকবে। ৫০ শতাংশ আসন ফাঁকা রেখেই রেস্তোরাঁ খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মর্মে কলকাতার সমস্ত থানাকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে লালবাজারের তরফে। আজ থেকেই ফের শহরজুড়ে শুরু নাকা চেকিং।
কলকাতায় ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়েছে শতাধিক। কলকাতা পুরসভার শনিবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, একদিনে কলকাতায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় সাড়ে চারশো জন! করোনা ভাইরাসের এই বাড়বাড়ন্তের জন্য অসচেতনতাকেই দায়ী করছেন চিকিৎসকরা। কলকাতা পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুব্রত রায়চৌধুরীর কথায়, পুজোর সময় মানুষজন প্রয়োজনীয় কোভিড বিধি মানেননি, যার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে এখন। চিকিৎসক কুণাল ঘোষও দায়ী করেছেন জনসাধারণের কোভিড বিধি মানার ক্ষেত্রে উদাসীনতাকে। পাশাপাশি তাঁর পর্যবেক্ষণ, ভ্যাকসিনেশনের ডোজ প্রবল মাত্রায় না বাড়ানো গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
এদিকে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ডবল ডোজ প্রাপকদের নতুন করে মারণ ভাইরাসে সংমক্রমিত হওয়া। তবে চিকিৎসকমহলকে রীতিমতো আতঙ্কে রাখছে উপসর্গহীনদের সংখ্যা। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, গত একদিনে কলকাতায় নতুন করে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে অর্ধেকের বেশিই উপসর্গহীন! কলকাতায় একদিনে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছে ৪৪৯ জন। যার মধ্যে ১৯৪ জন ডবল ডোজ প্রাপক। আর আক্রান্ত ৪৪৯ জনের মধ্যে ২৫৭ জনই উপসর্গহীন।
এই অবস্থায় শহরে করোনার সংক্রমণে লাগাম টানতে তৎপরতা বাড়াচ্ছে কলকাতা পুরসভা। মারণ ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ স্তিমিত হয়ে আসায় যে সব সেফ হোম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, আবার সেগুলি চালু করার তোড়জোড় চলছে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, তপসিয়ায় একটি সেফ হোমের সংস্কার হচ্ছে। ট্যাংরায় পুরসভা পরিচালিত চম্পামণি মাতৃসদনকে কোয়ারেন্টিন সেন্টার হিসেবে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। উত্তর কলকাতার হরেকৃষ্ণ শেঠ লেনে গড়ে তোলা হয়েছে ৬০ শয্যার চাইল্ড অ্যান্ড মাদার সেফ হোম। অক্সিজেন সিলিন্ডার থেকে কনসেনট্রেটর, সবই থাকছে চাইল্ড অ্যান্ড মাদার সেফ হোমে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, করোনা আক্রান্ত রোগীরা কাদের কাদের সংস্পর্শে এসেছেন, তার খোঁজ শুরু হয়েছে।