কলকাতা: ১০০ পেরিয়ে মাত্র মাত্র ১০ দিনেই ১০২ টাকা ছুঁয়ে ফেলেছে লিটার প্রতি পেট্রোলের দাম। পিছু নিয়ে ডিজেলের লিটারও পৌঁছেছে ৯৩ টাকায়।
২ মে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকে পেট্রোলের দাম বেড়েছে ৪১ বার। আর ডিজেল বেড়েছে ৩৭ বার।
জ্বালানির এই রেকর্ড দাম নিয়ে কেন্দ্রের তরফে বরাবরই বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দামবৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে উল্টো কথা।
গত ১০ দিনে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৪ ডলার অর্থাৎ, প্রায় ৩০০ টাকা কমেছে। কিন্তু, এই সময়ে কমা তো দূরের কথা, উল্টে লিটারে পেট্রোলের দাম বেড়েছে ২ টাকা।
আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়লে দেশে পেট্রোপণ্যের দামবৃদ্ধিতে বিন্দুমাত্র সময় লাগে না। অথচ প্রশ্ন উঠছে, বিশ্ব বাজারে ক্রুড অয়েলের দাম কমলেও, দেশের বাজারে তার প্রভাব নেই।
২০০৮ সালের জুনে অপরিশোধিত তেলের ব্যারেলের দাম সর্বোচ্চ ১৪৯ ডলারে পৌঁছলেও, দেশে পেট্রোলের লিটার ছিল ৫৪ টাকা।
কিন্তু গত বছরের ২১ এপ্রিল বিশ্ববাজারে ক্রুড অয়েলের ব্যারেল মাত্র ২০ ডলারে নেমে এলেও পেট্রোলের লিটার ছিল ৭৩ টাকা।
অর্থনীতিবিদ সৈকত সিন্হা রায় বলেন, দাম কমার প্রভাব পড়তে অনেক দেরি হয়, অথবা লঘু হারে, সুরাহা দিতে সরকারের উচিত ভর্তুকি দিক অল্প সময়ের জন্য।
এক ক্রেতা বললেন, পরিসংখ্যান দেখছি তেলের মূল দাম ৩২ টাকা, অথচ আমাদের দিতে হচ্ছে ১০০ টাকা। কেন্দ্র ও রাজ্য় এত ট্যাক্স নিচ্ছে। এর প্রতিবাদ হওয়া উচিত। মধ্যবিত্তদের সমস্যা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে জ্বালানির দাম নিয়ে কেন্দ্র ও তেল সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলেছেন পেট্রোল ডিলাররা। ইন্ডিয়ান অয়েল ডিলার ফোরামের সভাপতি জন মুখোপাধ্যায় বলেন, কোন যুক্তিতে দাম নির্ধারণ হচ্ছে তা স্বচ্ছ নয়।
পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট তেলের উপর মোটা শুল্ক নিয়ে পোয়াবারো কেন্দ্র ও রাজ্যের। পরিসংখ্যান বলছে, শনিবার লিটার প্রতি পেট্রোলের বেস প্রাইস ৪৫ টাকা ৯৮ পয়সা এবং ডিজেল ৪৫ টাকা ৮০ পয়সা।
এর উপর এক্সাইজ ডিউটি বাবদ পেট্রোলে ৩২ টাকা ৯০ পয়সা এবং ডিজেলে ৩১ টাকা ৮০ পয়সা কর নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। সেস ও ভ্যাট মিলিয়ে রাজ্য সরকার পেট্রোলে নেয় ১৯ টাকা ৭২ পয়সা এবং ডিজেলে নেয় ১৩ টাকা ১৯ পয়সা।
কমিশন বাবদ পেট্রোলে ৩ টাকা ৪৮ পয়সা ও ডিজেলে ২ টাকা ২৩ পয়সা পান ডিলাররা।