কলকাতা : যে কোনও ধরনের বাজির ওপর এবছরও স্থগিতাদেশ দিল জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট। গত বছরের নির্দেশিকাই বহাল রইল এবছর। কোনও ধরনের বাজি পোড়ানো যাবে না।
আদালত জানায়, 'বেঁচে থাকার অধিকার মৌলিক অধিকার। বৃহত্তর স্বার্থের কথা ভেবে ক্ষুদ্র স্বার্থ উপেক্ষা করতে হয় । ' 
এর আগে পরিবেশ বান্ধব বাজি পোড়ানোর ক্ষেত্রে কিছুক্ষণের জন্য ছাড় দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদ। কিন্তু আজ হাইকোর্ট জানায়, পরিবেশ বান্ধব বাজি চিহ্নিত করার কোনও উপায় পুলিশের কাছে নেই।  পুলিশের পক্ষে বাজি চিহ্নিত করা অসম্ভব। করোনা প্রতিদিন বাড়ছে। যাঁদের শ্বাস যন্ত্রের সমস্যা আছে, তাঁদের আরও বেশি সমস্যা হতে পারে। 
শুধু কালীপূজা নয়, ছটপূজা, গুরুনানকের জন্মদিন, বড়দিনেও বাজি নিষিদ্ধ করল আদালত। বাজির ক্রয় বিক্রয়ের ওপরও নিষেধাজ্ঞা রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে, পুলিশ কড়া হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করবে। 


গত বুধবার, দীপাবলিতে ২ ঘণ্টার জন্য পরিবেশবান্ধব বাজিতে ছাড় দেয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গে শুধুমাত্র পরিবেশ বান্ধব বাজিই বিক্রি করা যাবে। অন্য সব ধরনের বাজির বিক্রি ও তার ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। করোনা আবহে, দূষণ-শঙ্কার মধ্যেই জানিয়ে দিল পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। 


বুধবার পর্ষদের তরফে একটি নির্দেশনামা জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়, দূষণহীন দীপাবলি উৎসব করতে তারা বদ্ধপরিকর। আর তার জন্য সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের সমস্ত নিয়মাবলি মানা হবে। 
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশ ছিল, দীপাবলিতে মাত্র দু-ঘণ্টার জন্য, রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত, পরিবেশবান্ধব বাজি ফাটানো যাবে। কিন্তু শুক্রবার যে কোনও ধরনের বাজির ওপর এবছরও স্থগিতাদেশ দেয় হাইকোর্ট। 


কিন্তু পরিবেশবান্ধব বাজি বলে কি আদৌ কিছু হয়? সেই প্রশ্ন তোলেন পরিবেশবিদরা। 


সামনের সপ্তাহেই দীপাবলি। আলোর উত্সব। প্রতিবছর নানা নিষেধ সত্ত্বেও দেদার আতসবাজি আর শব্দবাজির দৌরাত্ম্য চলে। যা একধাক্কায় বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে বাতাসে দূষণের পরিমাণ! এই করোনা আবহে যা আরও মারাত্মক! শিশু - বয়স্করা তো বটেই, বিপদে পড়ার আশঙ্কা বাড়ে কোভিড থেকে সেরে ওঠাদেরও। কালীপুজোর পরের সপ্তাহেই ছটপুজো। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ নির্দেশ দেয়, ছটপুজোর দিন, সন্ধে ৬ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ফাটানো যাবে পরিবেশবান্ধব বাজি। বড়দিন এবং নিউইয়ার, বছর শেষের দুই উত্সবের দিনে, শুধুমাত্র ৩৫ মিনিট বাজি ফাটানোর অনুমতি দেওয়া হয়। 


কিন্তু করোনা আবহে গত বছরের মতো, এবারও বাজি ফাটানো ও বাজি পোড়ানো বন্ধের আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। যার শুনানি ছিল আজ, শুক্রবার। বাজির ধোঁয়ায় দূষণ বাড়ায় করোনা আক্রান্তদের শ্বাসকষ্টের সমস্যাও আরও বেড়ে যায়। সেই কারণেই এবছরও বাজির ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে বন্ধের আর্জি জানায় মামলাকারীরা। আজ সেই মামলার শুনানিতেই আদালত নির্দেশ দেয় , যে কোনও ধরনের বাজির ওপর এবছরও স্থগিতাদেশ জারি থাকবে।