কলকাতা : আজ মহাসপ্তমী।  কলা বৌ স্নান করিয়ে, ঘট প্রতিস্থাপন করে পুজো শুরু। সপ্তমাদি কল্পারম্ভ ও সপ্তমী বিহিত পূজা প্রশস্তা। পঞ্জিকামতে এবার ঘোটকে আগমন দেবীর। কথিত আছে, দেবীর ঘোটকে আগমনের ফল ছত্রভঙ্গ।  সপ্তমী তিথি  বাংলা ক্যালেন্ডার অনুসারে  ২৫ আশ্বিন, মঙ্গলবার। ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুসারে সপ্তমী ১২ অক্টোবর।  ভোর ৪টে ০৩ মিনিট ০৫ সেকেন্ড থেকে সপ্তমী শুরু হয়ে শেষ হচ্ছে ১টা ৪৬ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডে। 


লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ, কার্তিককে নিয়ে সপরিবারের দুর্গার বাপের বাড়িতে আসার দিন। ভোর থেকেই গঙ্গার ঘাটে নবপত্রিকা স্নান শুরু হয়ে গিয়েছে। এরপর দেবীর প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হবে। তারপর শাস্ত্রমতে ষোড়শ উপাচারে শুরু হবে সপ্তমীর পুজো। করোনা আবহে যাবতীয় সতর্কতা মেনেই মণ্ডপে মণ্ডপে দেবীর আবাহন হবে বলে আশ্বাস উদ্যোক্তাদের।  সাবেকিয়ানা থেকে থিম, উত্‍সবের রোশনাই ছড়িয়ে আছে বাংলা জুড়ে।  


শহরজুড়ে মহোত্সবের আবহ৷ উত্তর, দক্ষিণ, সব জায়গাতেই এক ছবি৷ সকাল থেকেই ঠাকুর দেখার ভিড়৷ নতুন জামাকাপড়৷ নতুন জুতো ৷ হৈ-হুল্লোড়, খাওয়া-দাওয়া৷ উত্সবের আনন্দে ভাসছে শহর। থিম, সাবেকিয়ানা, নান্দনিকতায় মিলে-মিশে উদযাপনের রঙ৷ বাঙালির সেরা উত্সব। 


দেবীকে ন’টি রূপে কল্পনা৷ নয়টি বৃক্ষের মধ্যে দিয়ে দেবীর কল্পনায় পুজিতা উমা৷ নবপত্রিকার মধ্যে দিয়েই প্রকৃতির সঙ্গে দেবীর এক চিরন্তন সম্পর্ক স্থাপন হয়৷ নব পত্রিকা স্নানের পরে একে একে চক্ষুদান, প্রাণপ্রতিষ্ঠা৷ বাড়ির পুজো হোক বা বারোয়ারি৷ সপ্তমীর সকালে সবাই উপস্থিত নদির ঘাটে৷ ঘটে করে গঙ্গার জল নিয়ে গিয়ে তার সঙ্গে শিশির থেকে সমুদ্র নানা জল মিশিয়ে স্নান তারপর কলাবউকে সাজিয়ে শুরু মহাসপ্তমীর পুজো৷  বনেদি বাড়িতে অবশ্য অনেকসময় এর সঙ্গেও থাকে নিজস্ব কিছু রীতি বা প্রকরণ৷ 


গতকাল  মহাষষ্ঠীতে মহানগরীর পথে দেখা যায় জনজোয়ার৷ মণ্ডপে মণ্ডপে চুটিয়ে ঘুরলেন দর্শনার্থীরা ৷ চুটিয়ে খাওয়া দাওয়া৷ আর দেদার আড্ডা৷ উত্তর থেকে দক্ষিণ, সর্বত্রই মণ্ডপে উপছে পড়া ভিড়, কোথাও করোনা বিধি মানা হল, কোথাও করোনা শঙ্কা উড়িয়ে দিলেন মানুষ উল্লাসে ৷ রাত যত গড়িয়েছে জনজোয়ার পরিণত হয়েছে জনপ্লাবনে৷ আলোর রোশনাই মাখা শহরে আনন্দের স্রোত৷ হাসি, খুশি আর হুল্লোড়৷