কলকাতা: কসবার ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে দেবাঞ্জন দেবকে জেরা করতে চায় ইডি। আদালতে এমনটাই আবেদন করেছে ইডি। দেবাঞ্জন সহ ধৃত ৯ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় বলে জানানো হয়েছে আবেদন পত্র। ইডির সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে আদালত। আদালতে জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে  ধৃতদের মধ্যে ৫ জন রয়েছে জেল হেফাজতে। অন্যদিকে ধৃতদের মধ্যে যে ৫ জন জেলে, তাদের জেলে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে ইডি। জেল হেফাজতের পর বাকি ৪ জনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে ইডি। এমনই নির্দেশ দিয়েছে আদালত। গতকাল ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেবকে পেশ করা হয় আদালতে। তার সঙ্গে আজ আদালতে পেশ করা হয় দেবাঞ্জনের ৭ জন সঙ্গীকেও। 


মাস খানেক আগেই কসবায় ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে ধরা পড়েন দেবাঞ্জন দেব। সাংসদ ও অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কোনও শংসাপত্র না পেতেই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। এর পর একে একে তাঁর অপকর্মের তালিকা সামনে আসে। জানা যায়, বিভিন্নভাবে প্রতারণার জাল পেতেছিলেন দেবাঞ্জন। গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। শুরু হয় তদন্ত। তাঁর সম্পর্কে আরও জানা গিয়েছিল স্নাতক স্তরে পড়াকালীনই প্রতারণায় হাত পাকানো শুরু ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে অভিযুক্তে ধৃত দেবাঞ্জনের, প্রতারণার হাত থেকে বাদ যাননি গৃহশিক্ষকও।


ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দেবাঞ্জনের সংস্থার কর্মী-সহ ১০ জনকে তলব করা হয়। একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে কেএমসি, পিডব্লুডি-র প্রচুর জাল স্ট্যাম্প উদ্ধার হয়েছে। প্রতারণার হাত থেকে বাদ যাননি পারিবারিক বন্ধুও, ভুয়ো ক্যাম্প থেকে ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন দেবাঞ্জনের বোনের বন্ধু ও তাঁর বাবা-মা। শুধু প্রতারক নন। রীতিমতো বদমেজাজি ছিলেন দেবাঞ্জন দেব। দাবি তার সংস্থার কর্মী শুভাশিস দাসের। 


দেবাঞ্জন দেবের বিরুদ্ধে আরও প্রতারণার অভিযোগ সামনে আসে। পুলিশের দাবি, কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিক্রির টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার নামে, একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার কাছ থেকে ৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন দেবাঞ্জন। সেই টাকা ICICI ব্যাঙ্কের কসবা শাখায় কলকাতা পুরসভার নামে তৈরি ভুয়ো অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে বলে দাবি পুলিশের। 


এর পাশাপাশি, ভ্যাকসিন-প্রতারণাকাণ্ডে গতকাল দেবাঞ্জনের সংস্থার ৩ কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ভুয়ো অ্যাকাউন্ট চালাতে কলকাতা পুরসভার স্পেশাল কমিশনার তাপস চৌধুরীর সই জাল করতেন দেবাঞ্জনের দুই সহযোগী সুশান্ত দাস ও রবীন শিকদার। আরেক ধৃত শান্তনু মান্না দেবাঞ্জনের হয়ে ভুয়ো ক্যাম্পের আয়োজন করতেন। এদের জেরা করে চক্রের জাল কতদূর বিস্তৃত, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ভুয়ো ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্প থেকে ভ্যাকসিন নিয়েছেন তৃণমূলের সাংসদ থেকে ব্লক সভাপতির পরিবার। কলকাতা পুরসভার লোগো লাগানো মাস্কও বিলি করতেন দেবাঞ্জন।