কলকাতা: এক বছর ধরে প্রতারণার জাল ছড়াচ্ছিল ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে ধৃত দেবাঞ্জন। তদন্তে উঠে এল এমনই তথ্য। করোনার সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরেই প্রতারণার পরিকল্পনা করে সে। আর তার জন্য ২৫ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে।
সময় যত এগোচ্ছে ততই একের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। জানা গিয়েছে, শুরুতে পিপিই, মাস্কের ব্যবসা করবে বলে ঠিক করে দেবাঞ্জন। ধীরে ধীরে রাজনৈতিক যোগাযোগ বাড়াতে থাকে দেবাঞ্জনের। রাজনৈতিক যোগাযোগ বাড়ার পরেই একের পর এক ক্যাম্প শুরু করে। পুরসভার কয়েকজন অফিসারের সঙ্গে সুসম্পর্কের সুযোগে প্রভাব বিস্তার করে দেবাঞ্জন। রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়েই ব্যবসা বাড়ানোই ছিল উদ্দেশ্য।
ভ্যাকসিনকাণ্ডে ধৃত দেবাঞ্জন দেবকে জেরায়উঠে এসেছে আরও তথ্য। জানা গিয়েছে, কোভিশিল্ডের মতোই স্পুটনিকের নামেও অন্য ওষুধ ব্যবহার করেছিল ধৃত। স্পুটনিকের ভায়ালের লেবেলের ফটোকপি লাগিয়ে প্রতারণার তথ্য সামনে এসেছে। কোভিশিল্ডের ক্ষেত্রে নিজেই কম্পিউটারে তৈরি করে জাল লেবেল। পুলিশ সূত্রে খবর, পুর-অফিসার পরিচয়েই মেহতা বিল্ডিংয়ে ইঞ্জেকশন কেনে দেবাঞ্জন। এখনও পর্যন্ত ২ হাজার জনকে ভুয়ো ভ্যাকসিন দিয়েছে দেবাঞ্জন। সূত্রের খবর, সমস্ত ভুয়ো ক্যাম্পের নেপথ্যেই ছিল রাজনৈতিক নেতা বা তাদের ঘনিষ্ঠ। এদিন ধৃতের অফিস থেকে পুরসভার জাল স্ট্যাম্পও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, কোনও ভায়াল থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয় তাতে ছিল না ব্যাচ নম্বর, এক্সপায়ারি ডেট। কোনও ভায়ালেই ছিল না ম্যানুফ্যাকচারিং ডেট। করোনার ভ্যাকসিনের মতো দেখতে ভায়ালে ভ্যাকসিনেশন বলে কসবা প্রতারণা কাণ্ডে বিস্ফোরক দাবি কলকাতা পুরসভার। কোভিশিল্ডের আড়ালে এনক্যাসিন-৫০০ ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল বলে অনুমান তদন্তকারীদের। এনক্যাসিন-৫০০ ইঞ্জেকশনের ওপর লাগানো হত কোভিশিল্ডের লেভেল। ওষুধের দোকান থেকে কেনা হত এনক্যাসিন-৫০০ ইঞ্জেকশন। জয়েন্ট কমিশনার পরিচয় দিয়ে দোকান থেকে এনক্যাসিন কিনত দেবাঞ্জন। এমনটাই দাবি পুলিশের। ইতিমধ্যে সিটি কলেজে ভুয়ো ক্যাম্প নিয়ে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কসবার সঙ্গে সিটি কলেজের মামলারও তদন্ত করবে লালবাজার।