কলকাতা: জ্ঞানেশ্বরী প্রতারণাকাণ্ডের তদন্তে ধোঁয়াশা কাটাতে অভিযুক্ত অমৃতাভ চৌধুরীর DNA এবং অসিফিকেশন টেস্ট করাল সিবিআই। ব্যাঙ্কশাল আদালতের অনুমতি নিয়ে আজ অমৃতাভ ও তাঁর বাবাকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। জীবিত ও মৃতের রহস্য ভেদ করতে এখন রিপোর্টের দিকে তাকিয়ে সবাই।


ঠিক যেন কোনও রহস্য উপন্যাস বা থ্রিলারের স্ক্রিপ্ট। রেলদুর্ঘটনায় যাঁর মৃত্যুর জেরে সরকারি চাকরি পেয়েছে পরিবার, মিলেছে আর্থিক ক্ষতিপূরণ, হঠাৎ‍ সামনে এল তাঁর জীবিত থাকার চাঞ্চল্যকর তথ্য!


কিন্তু, এই অমৃতাভ চৌধুরীই কি সেই অমৃতাভ চৌধুরী, ২০১০ সালে জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনায় যাঁর মৃত্যু হয়েছিল? তা নিশ্চিত হতে জোড়াবাগানের বিতর্কিত বাসিন্দার DNA টেস্ট করাল সিবিআই। সেই সঙ্গে করানো হল অসিফিকেশন টেস্ট। 


অমৃতাভর ডিএনএ পরীক্ষার অনুমতি আদালতের কাছে আগেই নিয়ে রেখেছিল সিবিআই। বৃহস্পতিবার তাঁর অসিফিকেশন টেস্ট বা হাড়ের বয়স নির্ধারণের অনুমতিও ব্যাঙ্কশাল আদালত থেকে নেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তারপরে অমৃতাভ ও তাঁর বাবা মিহির চৌধুরীকে নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে যায় গোয়েন্দা দল। 


সিবিআই সূত্রে খবর, অমৃতাভ চৌধুরীর DNA রিপোর্টের সঙ্গে তাঁর বাবা মিহির চৌধুরীর DNA-র নমুনা মিলিয়ে দেখা হবে। জ্ঞানেশ্বরী প্রতারণা তদন্তে অমৃতাভর বয়স ও উচ্চতা নিয়ে একাধিক ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। রহস্যের অন্ধকার সরণিতে আলো ফেলতে এখন পরীক্ষার রিপোর্টের দিকে তাকিয়ে গোয়েন্দারা। 


এ যেন সিনেমার চিত্রনাট্য। যাঁর মৃত্যুর জেরে সরকারি চাকরি পেয়েছে পরিবার, আর্থিক সাহায্যও মিলেছে, সেই তাঁরই হঠাৎ‍ জীবিত থাকার চাঞ্চল্যকর তথ্য। কিন্তু, এই কি সেই?এই অমৃতাভ চৌধুরীই কি সরকারি খাতায় ২০১০ সালে জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনায় মৃত অমৃতাভ চৌধুরী? তদন্তকারীরা বলছেন, এই যে সেই, তা মনে করার একাধিক পোক্ত কারণ ও যুক্তি আছে। কিন্তু, তাঁর সঙ্গে বেশকিছু ধোঁয়াশাও থেকেই গিয়েছে। 


শিয়ালদা DRM অফিসে, কাজ করেন অমৃতাভ চৌধুরীর বোন মহুয়া চৌধুরী পাঠক। ভাইয়ের মৃত্যুর গ্রাউন্ডেই তিনি এই চাকরি পেয়েছিলেন। কিন্তু, হঠাৎ‍ই অফিসে তাঁর দেখা নেই। অন্য়দিকে বাড়ির সামনে পোস্টবক্সে বাবা ও ছেলের নাম রয়েছে, মেয়ের নাম লেখা কাগজ ছেড়া রয়েছে।


অভিযুক্ত অমৃতাভর বাবা বলছেন, 'রেলকে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন। রেলের কাছে তো লিস্ট আছে।' সব মিলিয়ে মৃত থেকে হঠাৎ‍ই জীবিত হয়ে ওঠা অমৃতাভ-রহস্যের জট কাটাতেই এখন মরিয়া চেষ্টা করছে সিবিআই।