কলকাতা: ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জনের দেবের মতোই পুলিশের হাতে ধৃত সিবিআইয়ের কৌঁসুলি বলে পরিচয় দেওয়া সনাতন রায়চৌধুরীর কাণ্ডকারখানাও কোনও অংশে কম নয়। একে একে প্রকাশ্যে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। 


পুলিশ সূত্রে খবর, ভুয়ো পরিচয় দিয়ে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে ধৃত সনাতন রায়চৌধুরী লোকসভা নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। 


সূত্রের খবর, ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তিনি এলজেপি-র টিকিটে দমদম কেন্দ্রে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। ভোট পেয়েছিলেন ৫ হাজার ২৬৫টি। তাঁর জমানত জব্দ হয়। 


নির্বাচন কমিশনে হলফনামায় সনাতন জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবার নাম সুশান্ত রায়চৌধুরী। বাড়ি বরানগরে। সূত্রের খবর, ২০০৯ সালে এলজেপি-র টিকিটে  নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর ২০১১-তে তিনি বিজেপির দিকে ঝোঁকেন।


এদিকে, এদিন সকালে সনাতনের আরও একটি চমকপ্রদ তথ্য সামনে আসে। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় সনাতন দাবি করেছেন, তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিনিধি হয়ে ব্রিকস সম্মেলনে গিয়েছিলেন। 


যে সম্মেলনে হাজির ছিলেন প্রধানমন্ত্রীও।  তা ছাড়াও সনাতন বিদেশের একাধিক দেশে গিয়েছেন বলে জেরায় দাবি করেছেন।  


সেইসঙ্গে সনাতনের আরও দাবি, ২০১৩ সালে তিনি ভারতীয় প্রতিনিধি হিসেবে টোকিওয় ইন্দো-জাপান বিজনেস সামিটেও অংশ নিয়েছিলেন।  


সনাতনের দাবি সত্যি হলে, কীভাবে তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিনিধি হয়ে ব্রিকস সম্মেলনে গেলেন? কীভাবেই বা অংশ নিলেন টোকিও ইন্দো জাপান বিজনেস সামিটে? কার কার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল, কাদের সাহায্যে তিনি বিদেশে গিয়েছিলেন? এ সবই খতিয়ে দেখছে পুলিশ। 


সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ও বিদেশ মন্ত্রকের কাছ থেকে পুলিশ খোঁজ নেবে, সত্যিই সনাতন ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন কিনা। যদি যোগ দিয়ে থাকেন, তাহলে কীভাবে দিয়েছিলেন? সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে না কি, অন্য কোনও ভাবে? 


অভিযোগ, নিজেকে হাইকোর্টের রাজ্য সরকারের স্ট্যান্ডিং কাউন্সিলের সদস্য, সিবিআইয়ের কৌঁসুলি, মুখ্যমন্ত্রীর অফিসের উপদেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন সময় পরিচয় দিয়েছেন সনাতন।