ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: মণিপুরের বাসিন্দা ৪৭ বছরের এক ব্যক্তিকে বাঁচাতে এক অভিনব পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচার করলেন কলকাতার হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা। 'ফ্রজেন এলিফ্যান্ট ট্রাঙ্ক' সার্জারিতে প্রাণ বাঁচল মণিপুরী ওই হৃদরোগীর। পূর্ব ভারতে এই পদ্ধতিতে এটাই প্রথম অস্ত্রোপচার, দাবি মুকুন্দপুরের আর এন টেগোর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে যে ওই রোগীর একটি ধমনীর ভিতরের আস্তরণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রক্তক্ষরণ হয়ে ধীরে ধীরে রক্ত চলাচল বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। চিকিৎসকদের পরিভাষায় বলা হয় - STANFORD TYPE A Aortic Dissection।
ক্ষতিগ্রস্ত ধমনী সারাতে "ফ্রোজেন এলিফ্যান্ট ট্রাঙ্ক সার্জারি" পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচার করা জরুরি বলে মত দেন চিকিৎসকেরা। এই ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত ধমনীর মেরামত করা হয়। পূর্ব ভারতে এই প্রথম।
অস্ত্রোপচারের নেতৃত্ব দেন হৃদশল্য বিশেষজ্ঞ অতনু সাহা। ১৫ ঘণ্টার এই অস্ত্রোপচারে ক্ষতিগ্রস্ত ধমনীতে হাতির শূরের আকারের একটি বিশেষ স্টেন্ট ও কৃত্রিম আস্তরণ বসানো হয়। সেই কারণেই এই অস্ত্রোপচারের নাম ‘ফ্রোজেন এলিফ্যান্ট ট্রাঙ্ক’ সার্জারি।
কার্ডিওথোরাসিক সার্জন অতনু সাহা বলেন ‘‘রোগীর যা পরিস্থিতি ছিল তাতে দ্রুত পদক্ষেপ করতে হতো। এই বিশেষ পদ্ধতিতে বসানো অভিনব স্টেন্টের মাধ্যমে বিপদ ঠেকানো সম্ভব হয়েছে।’’ কলকাতার আর এক প্রবীণ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী জানান, ‘‘পূর্ব ভারতে এর আগে এই ধরনের অস্ত্রোপচার কখনও হয়নি। পুরো টিমকে আমার অভিনন্দন।’’ অস্ত্রোপচার হওয়ার পর আট দিনের মাথায় রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, রোগীর গত কয়েক মাস ধরে বুকে ব্যথা ও অস্বস্তি ছিল। এরপর মণিপুরে চিকিৎসকের পরামর্শে সিটি অ্যাঞ্জিওগ্রাফি করা হয়। দেখা যায় একটি ধমনীর ভেতরের একটি আস্তরণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে রক্ত চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এরপর মুকুন্দপুরে আর এন টেগোর হাসপাতালে বিশেষ বিমানে নিয়ে এসে ভর্তি করা হয়। এরপর বিশেষ পদ্ধতির অস্ত্রোপচার এবং আটদিন পর ছুটি।