সঞ্চয়ন মিত্র ও ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: তর্পণের জন্য কলকাতা বিভিন্ন গঙ্গার ঘাটে ভিড় করলেন অসংখ্য মানুষ। কোভিডের দূরত্ব বিধি কার্যত শিকেয় উঠল। বেশিরভাগেরই মুখে ছিল না মাস্ক। এই ভিড়ের কারণে করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা করছেন অনেকে।
মহালয়ার সকালে গঙ্গার ঘাটে ঘাটে তর্পণের উপচে পড়া ভিড়। বহু ঘাটেই তিল ধারণের জায়গা ছিল না। বাগবাজার ঘাটে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে পিতৃপুরুষের উদ্দেশে তর্পণ। এমনই ভিড় যে ঘাটে পা রাখারও জায়গা নেই।
গতবছর কোভিড বিধির জন্য অনেকে বিধিনিষেধ ছিল। এবারও রয়েছে। কিন্তু সকাল থেকে কোভিড বিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে গঙ্গার ঘাটে প্রচণ্ড ভিড়। কোভিড যখন চোখ রাঙাচ্ছে, যখন সংক্রমণকে পুরোপুরি বাগ মানানো যায়নি, তখন এই ভিড়ের কারণে আবার মাথাচাড়া দিয়েছে নতুন করে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা।
তর্পণের এই ভিড়ে অশনি সঙ্কেত দেখছেন চিকিত্সকরাও। চিকিত্সক কুণাল সরকারের কথায়, মহালয়ার দিন ঘাটে ঘাটে কোভিড বিধি কার্যত শিকেয় উঠল। মুছে গেল দূরত্বর বিধি। অনেকের মুখেই ছিল না মাস্ক। চিকিত্সকদের আশঙ্কা, এ সবের কারণে আবার ছড়াবে না তো করোনার সংক্রমণ?
আজ ছিল মহালয়া৷ আগামীকাল দেবীপক্ষের সূচনা৷ সপ্তাহ পেরোলেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ শারোদত্সব। পিতৃপক্ষের অবসানের পুণ্যতিথিতে গঙ্গার ঘাটে ঘাটে মানুষের ঢল৷ পূর্বপুরুষের উদ্দেশে তর্পণ জেলাতেও৷ বিভিন্ন জায়গায় হল মায়ের চক্ষুদান।
মহালয়া...। আশ্বিনের শারদ প্রাতে বেজে উঠল আলোর বেণু...। পুজোর বাকি আর মাত্র কয়েকটা দিন৷ বুধবার পিতৃপক্ষ শেষ, বৃহস্পতিবার শুরু দেবীপক্ষ৷ ভাদ্র মাসের কৃষ্ণা প্রতিপদ থেকে শুরু করে পরবর্তী অমাবস্যা--এই সময়কে বলা হয় পিতৃপক্ষ৷ পুরাণ মতে, ব্রহ্মার নির্দেশে পিতৃপুরুষরা এই ১৫ দিন মনুষ্যলোকের অত্যন্ত কাছাকাছি চলে আসেন৷ তাই এই সময় কিছু অর্পণ করা হলে তা সহজে তাঁদের কাছে পৌঁছে যায়৷
গোটা পক্ষকাল ধরেই পিতৃপুরুষদের স্মরণ ও তর্পণ করা হয়৷ যার চূড়ান্ত প্রকাশ বা মহালগ্ন হল মহালয়া৷ মহালয়ার দিন অমাবস্যায় তাঁদের উদ্দেশ্যে জলদানই হল তর্পণ৷ মহালয়ার এই পুণ্যতিথিতে পিতৃপুরুষের উদ্দেশে তর্পণের জন্য এদিন গঙ্গার ঘাটে ঘাটে ছিল মানুষের ঢল৷ কলকাতার পাশাপাশি তর্পণের ছবি ধরা পড়েছে বিভিন্ন জেলাতেও।