দীপক ঘোষ, কলকাতা: মহিমা ফিরে পেল মুরলীধর, গ্ল্যামার হারাল হেস্টিংস। বিজেপির সাংগঠনিক দফতর ফের করা হল মুরলিধর সেন লেনেই। একুশের নির্বাচনী লড়াই এর জন্য বিজেপির ছিল সাজ সাজ রব। হেস্টিংস মোড়ে আগরওয়াল বিল্ডিং এর পাঁচ খানা ফ্লোর ভাড়া নিয়েছিল গেরুয়া শিবির। শুধু রাজ্য স্তরের নেতাই নন, জাতীয় স্তরের নেতারাও কলকাতায় এলে এখানেই বসতেন। এখানেই ছিল দলের পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয় ঘর। এছাড়া দুই সহকারী পর্যবেক্ষক শিবপ্রকাশ এবং অমিত মালব্য বসতেন এখানে। তাদের জন্য বরাদ্দ ছিল আলাদা আলাদা ঘর। কিন্তু এবার ফের মুলিধর সেন লেনের বিজেপি রাজ্য দফতরেই সাংগঠনিক অফিস করা হল।


হেস্টিংসে কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে মুকুল রায়ের জন্য বরাদ্দ ছিল বিশাল এক কক্ষ। এছাড়া সভাপতি দিলীপ ঘোষ,  সহ সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংগঠনিক সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তীও বসতেন এখানে। ব্যতিক্রম ছিলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি সব সময়ই জেলায় ঘুরে বেড়াতেন, সামান্য সময়ের জন্য কলকাতায় এলে তিনি বসতেন মুরলিধরের সেই ঘুপচি ঘরেই। তার কথায় এই ঘরে বসে যে প্রশান্তি তিনি পান, অন্য কোনও ঘরে সেটা পাওয়া যায়না। যদিও ভোটের কাছাকাছি সময়ে কাজের সমন্বয় বাড়াতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কথা মেনেই হেস্টিংস আসা বাড়িয়ে দেন তিনি। এছাড়া হেস্টিংসে আছে ক্যান্টিন, আইটি সেল, কনফারেন্স রুম, কর্মীদের থাকার জায়গা। সব মিলিয়ে হৈ হৈ কান্ড, রই রই ব্যাপার। কিন্তু সব রোশনাই ফিকে পড়ে যায় ২ মে। যে স্বপ্ন নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বিজেপি, সেই স্বপ্ন রয়ে গেল নাগালের বাইরেই, ফলে এখন আবার শুরু হল গুটিয়ে নেবার পালা। সিদ্ধান্ত হয়েছে, সমান্তরাল দুটো সাংগঠনিক কার্যালয়ে রাখা হবে না। ৬ নম্বর মুরলি ধর সেন লেনের রাজ্য দপ্তর থেকে যেমন সাংগঠনিক কাজকর্ম চালানো হতো একইভাবে আগামী দিনে এখান থেকেই সাংগঠনিক কাজকর্ম চলবে।


হেস্টিংস এর সাংগঠনিক  কার্যালয় তুলে আনা হচ্ছে মুরলিধরে। যে সমস্ত নেতা ওখানে বসে দল পরিচালনা করতেন তাঁরা এবার চলে আসবেন মুরলিধরে। ফলে আটতলা ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। ওখানেই আপাতত থেকে যাচ্ছে,  আইটি সেল, কনফারেন্স রুম, ক্যান্টিন। এছাড়া কর্মীদের কমিউনও থাকছে হেস্টিংসে। বিষয়টি নিয়ে অনেকদিন ধরেই দলের অন্দরে ভাবনাচিন্তা চলছিল।  সাংগঠনিক কার্যালয় হিসেবে সমান্তরালভাবে দুটো অফিস কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল, কিন্তু আটকে ছিল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। বিজেপি যুব মোর্চার সহ সভাপতি রাজু সরকারের আকস্মিক  মৃত্যুতে সেই সিদ্ধান্ত বদল। উল্লেখ্য, গত সোমবার মৃত্যু হয় রাজু সরকারের। সেই ঘটনার পর থেকে আর কোনও নেতা হেস্টিংস অফিসের চেম্বারে গিয়ে বসেননি। তারপর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হল, হেস্টিংস  অফিসে যে নেতারা বসেন তারা এখন থেকে মুরলিধরে বসবেন।  এখান থেকেই সাংগঠনিক কাজকর্ম চালাবেন তারা।