রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: ধর্মীয় স্থানের জমি দখল করার অভিযোগের পর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে এবার জলাভূমির চরিত্র বদল করে বহুতল আবাসন নির্মাণের পরিকল্পনা এক প্রোমোটারের। এক ফোনে নবান্নে মখ্যমন্ত্রীকে অভিযোগ পরিবেশ কর্মী তথা প্রাক্তন ল্যান্ড অফিসার জ্যোতি প্রসাদ রায়ের।
তাঁর অভিযোগ, এর পেছনে পলিটিক্যালি একটা ইনভল্ভমেন্ট আছে তা না হলে, এত বড় ঝুঁকি নিতে পারতো না, এর মধ্যে প্রভাবশালী কেউ আছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তিনি আরও জানান, এটা একটা বড় জলাশয় ছিল এখানে নৌকো পারাপার হত। ফিশারি ডিপার্টমেন্ট একটা সময় মাছ চাষ করেও বিক্রি করতো। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে কিছু অসাধু মানুষ এই জলাশয়কে ধরার চেষ্টা করছে। এটা কে সার্ভে করল ? কী হিসাবে এটা হল ? প্রশ্ন তোলেন তিনি। এখানে ১৮ বিঘা জমি আছে পুরোটাই জলাশয়। করোনাকালে ভূমি দপ্তরের সাথে রাতারাতি যোগসাজশ করে ওর নামে করেছে। পুরসভাতেও ডেপুটেশন দিয়েছি তারা বলেছে এখনও কোন অনুমতি তাঁরা দেয়নি।
৫০০ লরি মাটি এখানে ফেলা হয়েছে। এখানে ৮৪ টি ফ্ল্যাট বাড়ি হবে। নবান্নে সমস্ত বিষয়টি জানিয়েছি । তারা সমস্ত নথি চেয়ে পাঠিয়েছে। আশ্বাস দিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী যেখানে বারবার বলছে, সেখানে ওনাকে অনুমতি কে দিল ? আমরা আশাবাদী এত নেতা গ্রেফতার হচ্ছে ফুলবাড়ি থেকে এত অন্যায় করে ছাড় পাবে ? এর সাথে ব্যক্তিগত ইনভল্ভমেন্ট আছে কেউ তার পাওয়ারই হচ্ছে, এই প্রোমোটারের পেছনে মদত ছিল প্রভাবশালী কেউ।
পাল্টা তৃণমূলের টাউন ব্লক সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, প্রোমোটার অশোক জিন্দালের পেছনে প্রভাবশালী কারো যদি মদত থাকে আমরা রেয়াদ করবো না সে যত বড়ই প্রভাবশালী নেতা হোক্ না কেন তার সাথে যুক্ত থাকলে সফল হতে পারবে না। যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ রয়েছে সরকারি বা খাস জমি অবৈধভাবে কেউ অধিগ্রহণ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। কোনও প্রোমোটার যদি অবৈধভাবে জমি দখল করে আমাদের দলও সেটাকে রেয়াত করবে না।
পুরসভার পুরো চেয়ারপার্সনকেও লিখিত অভিযোগ জানালে পুরসভার পক্ষ থেকে তাদের প্ল্যান পাশ আটকে দেন চেয়ারপার্সন পাপিয়া পাল। এই জলাভূমিতে হাজার কিউসেক জল ধারন ক্ষমতা রয়েছে। পরিবেশ কর্মীদের বাধায় আটকে গেল কাজ। জলাজমিকে পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবিতে এক হয়ে জলাভূমি সংরক্ষনের বোর্ড টানিয়ে দিলেন জলপাইগুড়ি শহরের পরিবেশ কর্মীরা। অভিযোগের পর ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিকরা এসে জমি পরিদর্শনও করে যান। তাঁদের কাছে প্রাকৃতিক এই জলাশয় সংরক্ষনের দাবি জানান পরিবেশ কর্মীরা। জলপাইগুড়ি শহরের স্পোর্টস কমপ্লেক্স সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে ১৮ বিঘা জমি। এই জমিকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
আরও পড়ুন, 'ধর্মতলায় যেতে হবে.', হাওড়া স্টেশন থেকে ছবি তুলে ফেরার দিন শেষ, ২১ জুলাইয়ের আগে স্পষ্ট বার্তা
অভিযোগ, এক সময় এইখানে নৌকা চলাচল করতো, পাখি, সাপ,ব্যাঙ,মাছ,বালি হাঁসের আদি ঠিকানা ছিল। এখন আর কিচ্ছু নেই। এই জমির কাগজে কলমে চরিত্র বদল করে বহুতল নির্মানের চেষ্টা চালাচ্ছে এক অসাধু ব্যবসায়ী বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যেই এই জমিতে বহুতল তৈরির জন্য পাঁচশো ট্রাক মাটি ফেলে উচু করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি, এতে পরিবেশের ভারসাম্য জোর করে নষ্ট করার অভিযোগ তুলে সরব হন পরিবেশ কর্মীরা। মুখ্যমন্ত্রী কে অভিযোগ পাঠানোর পাশাপাশি পুরসভা, ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের দ্বারস্থ হন তারা।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।