ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: শিশুদের ফুসফুসের জটিল রোগের অস্ত্রোপচারে সাফল্য। সুস্থ হয়ে কলকাতার বিসি রায় শিশু হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরল মা ও সন্তান। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ১৮ দিনের সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন মা। চিকিত্সসকরা জানাচ্ছেন, এই রোগে প্রশ্বাসের সঙ্গে বাতাস শরীরে ঢুকলেও কিন্তু বেরোতে পারে না। এতে ফুসফুসের অন্য অংশ বা হৃদযন্ত্রেও চাপ পড়ে। ফলে শিশুকে বাঁচানো বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। বিসি রায় শিশু হাসপাতালে শিশুর ফুসফুসের ওই অংশটি অস্ত্রোপচারে বাদ দেওয়া হয়েছে। সারিয়ে তোলা সম্ভব হয়েছে ১৮ দিনের শিশুকে। চিকিত্স কদের দাবি, প্রতি ৩০ হাজার শিশুর মধ্যে মাত্র একজনের এই রোগ হয়।
সদ্যোজাত এই শিশুর শ্বাস নিতে অসুবিধা হচ্ছিল। বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষায় ওই শিশুর Congenital Lobar Emphysema ধরা পড়ে। এটি খুবই জটিল রোগ। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এটি এমন একটা রোগ যেখানে ফুসফুসের কোনো একটি অংশে (lobe) প্রশ্বাসের সঙ্গে বাতাস ঢুকতে পারে। কিন্তু তা বেরোতে পারে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ফুসফুসের অন্য lobe বা অংশে চাপ পড়ে। এমনকী হৃদযন্ত্রেও চাপ পড়ে। ফলে এই রোগে আক্রান্ত শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা দেখা যায়। এক্ষেত্রে বাঁচার সম্ভাবনা জটিল ক্ষেত্রে প্রায় থাকেই না। বিশেষ করে ভারতের মতো দেশে এই রোগে আক্রান্ত হলে বাঁচার সম্ভাবনা খুবই কম।
এ ক্ষেত্রে কিন্তু হাল ছাড়েননি বিসি রায় শিশু হাসপাতালের চিকিৎসকরা। অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। আর সেই জটিল অস্ত্রোপচারেই মিলেছে সাফল্য। সুস্থ হয়ে শিশুটি মায়ের কোলে চেপে বাড়ি ফিরে গিয়েছে। এতে যেমন ওই শিশুর বাড়ির লোকজন আনন্দিত, তেমনই খুশি চিকিৎসকরাও। তাঁরা বলেছেন, ওই অংশটি বাদ দিয়েও যে শিশুটি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারল এতে আমরা খুশি। মায়ের কোলে শিশুটিকে ফিরিয়ে দিতে পেরে আমরা সবাই আনন্দিত। বিশেষ করে হাসপাতালে সরকারি পরিকাঠামোতে এক্ষেত্রে বিনামূল্যে শিশুটির চিকিৎসা সম্ভব হল।
বিসি রায় হাসপাতালের শিশু শল্য বিভাগের এই অস্ত্রোপচার দলে ছিলেন অধ্যাপক বি দেবনাথ, শিশু শল্য চিকিৎসক সুজয় পাল, শিশু শল্য চিকিৎসক এল হালদার ও অধ্যাপক মিত্র (অ্যানাসথেটিস্ট), শিশু শল্য চিকিৎসক পি বড়াই ও পেডিয়াট্রিক মেডিসিন টিম।