ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: পেশায় চিকিৎসক (Doctor)। নেশায় 'বাইকার' (Biker)। করোনা (Corona) হাসপাতালে আইসিইউ (ICU) চিকিৎসক। বরাবরই চ্যালেঞ্জ নিতে ভয় পান না। আর সেই 'নেশা'-র টানে বাইকে করে সিকিমের গুরুদংমার লেকে (Gurudongmar Lake) পৌঁছে গেলেন। ভারতের সবথেকে উঁচুতে অবস্থিত যে লেক। বাইকে করে প্রায় ১৮ হাজার ফুট ওপরে উঠলেন কলকাতার এক মহিলা চিকিৎসক।
মনিকা সাহা (Manika Saha)। কর্মস্থল, এম আর বাঙ্গুর (MR Bangur) করোনা আই সি ইউ। সাল ২০২০। করোনা আবহে ভয় না পেয়ে নতুন দায়িত্ব শেখা শুরু করা। দু'চাকার হাতেখড়ি বাবার হাত ধরে। পেশাগত জীবনের হাতেখড়ি করোনা হাসপাতালে করোনা চিকিৎসক হিসেবে। বাবাও প্রবীণ সার্জন মাখনলাল সাহা। তবে শেখার শুরুটা মোটেই মসৃণ ছিল না। গুরুতর চোট পেয়ে দু'চাকার বাহন চালানো সাময়িক বন্ধ ছিল। কিন্তু সাময়িক বিরতির পর ফের শুরু হয় নেশার সফর।
এরইমধ্যে নতুন বাইক কেনার আগ্রহ তৈরি হয়। লক্ষ্য সিকিমের গুরুদাংমার লেকে পৌঁছাতে হবে। ১৭৮০০ ফুট উচ্চতা। যাত্রা শুরু ৭ নভেম্বর। কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি। সেখান থেকে গ্যাংটক। গ্যাংটক থেকে লাচেন। সেখান থেকে গুরুদংমার লেক। মনিকার কথাতেই -" বাইক চালালে একটা আলাদা অনুভুতি হয়। সেটা কথায় বোঝানো যাবে না। একটা আলাদা মাদকতা। আর সেটাই আমাকে বাইকের সঙ্গে একাত্ব করে তোলে।" কীভাবে শুরু হল এই জার্নি? কলকাতার বিভিন্ন বাইক ক্লাব আর গোষ্ঠীর সদস্য হওয়া। প্রথমে দল মিলে বিভিন্ন দুর্গম জায়গায় বাইক নিয়ে অভিযান দিয়ে শুরু। সফভাবে সেগুলো সম্পন্ন হওয়ার পর সিকিম অভিযান।
পাহাড়ি রাস্তা, দুর্গম পথ। দলের মধ্যে দুজনের মনোবল অটুট ছিল। মনিকা সাহা আর সুপ্রতিম পোদ্দার। পথে যেতে যেতে দুজনের সাংঘাতিক অভিজ্ঞতা। ঠাণ্ডায় গাড়ি থেমে যাচ্ছিল। একে অপরের গাড়ি ঠেলাঠেলি করে অবশেষে লক্ষ্যে উপস্থিত হন দুজনেই। তরুণী চিকিৎসক জানান, “সে এক অন্য রকমের অনুভুতি। জীবনের প্রথম এরকম উচ্চতায় যাব স্থির করে সেটা সফলভাবে উত্তীর্ণ হতে পেরে সত্যি প্রচন্ড ভাল লাগছিল। অনেকটা, কোনও সঙ্কটজনক রোগীকে বাঁচাতে পারার আনন্দ।’’