ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, অনির্বাণ বিশ্বাস ও ঋত্বিক মণ্ডল: আগেই তাঁর কাছ থেকে বিজেপির সদস্যপদ নেওয়ার এই রশিদ মিলেছিল বলে দাবি পুলিশ সূত্রের। এবার আরও জোরাল হল সিবিআইয়ের ভুয়ো আইনজীবী ধৃত সনাতন রায়চৌধুরীর সঙ্গে বিজেপি-যোগের অভিযোগ। 


পুলিশ সূত্রে দাবি, তাঁদের হাতে এসেছে এই দুটি শংসাপত্র। যার মধ্যে একটি বিজেপি নেত্রী কৃষ্ণা ভট্টাচার্যর নামে লেটার হেডে লেখা। অন্যটি লেখা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এক সদস্যের নামে। একটি শংসাপত্রে দেখা যাচ্ছে, উপরে রয়েছে বিজেপি নেত্রী কৃষ্ণা ভট্টাচার্যর নাম। মাঝে রয়েছে বিজেপির প্রতীক।


কৃষ্ণা ভট্টাচার্যর পরিচয় হিসেবে লেটারহেডের ডানদিকে লেখা আছে, মহিলা মোর্চার সহ-পর্যবেক্ষক, বঙ্গ বিজেপির নির্বাচন কমিটির সদস্য এবং রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সহ সভাপতি।


শংসাপত্রের মূল অংশে সনাতন রায়চৌধুরীর বাবার নাম ও ঠিকানার পাশাপাশি, লেখা রয়েছে তিনি কলকাতা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী। 


তিনি হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী এবং কলকাতায় সাধারণ মানুষের জন্য সংগঠনের হয়ে কাজ করেন। সাধারণ মানুষের বোঝার জন্য সহজ করে আইনের বই লিখেছেন। তিনি অত্যন্ত ভাল এবং নৈতিক চরিত্রের অধিকারী। সনাতন হলেন সমাজের সম্পদ। 


শংসাপত্রের নীচে রয়েছে কৃষ্ণা ভট্টাচার্যর নামে সই।  তারিখ দেওয়া রয়েছে, ২০১৮ সালের ১৭ জুলাই। যদিও শংসাপত্র পুরোটাই ভুয়ো বলে দাবি করেছেন বিজেপি নেত্রী।


কৃষ্ণা ভট্টাচার্য বলেন, আমি জীবনে কোনও দিন এইরকম প্যাড ব্যবহার করিনি। নীচে যে সইটা আছে, আমি জীবনে কোনওদিন ইলেকশন কমিটিতে ছিলাম না। নীচের সইটা আমার নয়। সম্পূর্ণ ভুয়ো। আমি তো চিনি না। বুঝতেই পারছি না, কে সনাতন রায়চৌধুরী। 


পুলিশ সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, তাদের হাতে এসেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের, দক্ষিণবঙ্গ শাখার লেটারহেডে লেখা এই শংসাপত্রটিও। পরিষদের দক্ষিণবঙ্গ শাখার সহ সভাপতির পরিচয় দিয়ে, সেখানে রয়েছে চন্দ্রনাথ দাস নামে এক ব্যক্তির নামে সই।  তারিখ ২০১৭ সালের ২৫ জুন।


সেই শংসাপত্রেও সনাতন রায়চৌধুরীর নামে ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে।  শংসাপত্র নিয়ে চন্দ্রনাথ দাসের কোনও প্রতিক্রিয়া না পাওয়া গেলেও, বিষয়টি নিয়ে চড়ছে রাজনীতির পারদ। 


তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, সনাতন নিয়ে তদন্ত চলছে। আরও অনেক তথ্য সামনে আসবে। বিজেপি মহিলা নেত্রীর সার্টিফিকেট নিয়ে ঘুরেছেন। সেটাও সামনে আসবে৷। 


পাল্টা বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, রাজ্যে তো আইনশৃঙ্খলা বলে বিষয় আছে। কেউ কাউকে সংশাপত্র দিতেই পারে। সে দল করতেই পারে। দেখেশুনে মনে হচ্ছে লোকটা খারাপ লোক। কিন্তু কে সংশাপত্র দিয়েছে জানা নেই।


কথায় বলে, কেঁচো খুড়তে কেউটে। কিন্তু সনাতনকাণ্ডে যেন বেরিয়ে আসছে আরও বড় কিছু।