ঋত্বিক মণ্ডল, অনির্বাণ বিশ্বাস, উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: পেট্রোলের মতো গ্যাসের দামও বাড়ছে ক্রমাগত। যার জ্বালায় জেরবার গৃহস্থ। গত ৬ মাসে হু হু করে দাম বেড়েছে। মাত্র ৬ মাসেই ভর্তুকিহীন সিলিন্ডারের দাম বেড়েছে ১৪১ টাকা। এক বছরে ২৪১ টাকা। কেউ কেউ খরচ বাঁচাতে গ্যাস ছেড়ে ইনডাকশনে রান্না করছেন। সে উপায় কার্যত না থাকায় হোটেল মালিকরা পড়েছেন সমস্যায়।
এভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকলে কি অদূর ভবিষ্যতেই ১ হাজারে পৌঁছে যাবে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম? সবার মনে একটাই প্রশ্ন। মধ্যবিত্তের হেঁশেলেও লেগেছে জ্বালানির আগুন। হু হু করে দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে অনেকেরই আশঙ্কা, পুজোর সময় না চার অঙ্ক ছুঁয়ে ফেলে গ্যাসের দাম।
অথচ ৭ বছর আগে এই জুলাইয়ে গ্যাসের দাম ছিল অর্ধেকেরও কম। সিঁথির মোড়ের বাসিন্দা দীপাঞ্জনা বসুচন্দ পেশায় স্কুল শিক্ষিকা। খরচ বাঁচাতে এই স্কুল শিক্ষিকা গ্যাস ছেড়ে ইনডাকশন কুকারে রান্না করছেন। তিনি বলছেন, ‘আমাদের ৫ জনের পরিবার। ২ টো গ্যাস ব্যবহার করা হত আগে। কিন্তু যেভাবে গ্যাসের দাম বাড়ছে। তার জন্য আমি এখন গ্যাস ছেড়ে ইনডাকশন কুকার ব্যবহার করছি।’
গৃহস্থ গ্যাসের বদলে বিকল্প রাস্তা বেছে নিয়েছেন। কিন্তু রাস্তার ধারের হোটেল? যেখানে তো চটজলদি রান্না করে গরম গরম খাবার পরিবেশন করতে হয়। পরিসংখ্যান বলছে, ১৯ কেজির বাণিজ্যিক সিলিন্ডারের দাম মাত্র সাত মাসে বেড়েছে ২৫৭ টাকা। খাবারের দাম বাড়ালে খদ্দের হবে না। আবার মানও রাখতে হবে। ব্যবসা চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন রাস্তার ধারের হোটেল মালিকরা। সেরকমই এক হোটেলের মালিক সার্থক দাস বলেন, ‘গ্যাসের দাম বাড়ায় দাম বাড়ালে কাস্টমার থাকবে না। তবুও আমরা কিছু আইটেমের দাম বাড়িয়েছি। কিন্তু আমরাও অপারগ। কারণ যারা যারা আমাদের হোটেলে খেতে আসেন, তাঁদের প্রত্যেকেরই একটা সীমিত বাজেট থাকে।’
পেট্রোপণ্য থেকে রান্নার গ্যাস, দাম বাড়ছে। জ্বালা বাড়ছে মধ্যবিত্তের। অন্যদিকে ফুলে ফেঁপে উঠছে সরকারের কোষাগার। উল্লেখ্য, চলতি বছরের মার্চ মাসে তৎকালীন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, পেট্রোপণ্য এবং এলপিজির উপর উৎপাদন শুল্ক থেকে গত ৯ মাসে ৩ লক্ষ কোটি টাকা জমা পড়েছে কেন্দ্রের কোষাগারে। যা গত ৭ বছরে সর্বোচ্চ।